হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনের ফলে রীতিমতো অস্বস্তির মুখে ক্ষমতাসীন বিজেপি। রাজ্যের বিজেপি সরকারের ৭ ক্যাবিনেট মন্ত্রী, রাজ্য বিজেপির সভাপতি এবং বিধানসভার অধ্যক্ষ এ মুহূর্তে অনেকটা ভোটে পিছিয়ে পড়েছে নিজেদের কেন্দ্রে। ৯০ আসনের হরিয়ানায় বিজেপি এ মুহূর্তে এগিয়ে ৩৭টি আসনে, অন্যদিকে ২৮টি আসনে এগিয়ে থেকে ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে কংগ্রেস। ফলাফলের এই ট্রেন্ড দেখার পরই গেরুয়া শিবিরে শুরু হয়ে গিয়েছে বিশেষ তত্পরতা। ইতিমধ্যেই পদ্ম শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় ডাকা হয়েছে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টরকে। ফরিদাবাদের সাংসদ কৃষ্ণপাল বলেছেন, নয়াদিল্লিতে পৌঁছেছেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতা মন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
ফরিদাবাদের সাংসদ আরও বলেন, এখনও পর্যন্ত যা ফলাফল সেক্ষেত্রে জনগণ বিজেপির পক্ষেই ভোট দিয়েছেন। মনোহর লাল খট্টরের নেতৃত্বেই হরিয়ানায় সরকার গঠিত হবে। তবে আমাদের এখনও কিছু সময়ের জন্য অপেক্ষা করে যাওয়া উচিত। এদিকে, মহারাষ্ট্রে দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসতে চলেছে বিজেপি। কিন্তু সে রাজ্যেও কংগ্রেস-এনসিপির জোট ১০৩টি আসনে এগিয়ে থেকে ‘আগাম শক্তিশালী বিরোধী শক্তি’ হিসাবে মাথাচাড়া দিচ্ছে।
তবে হরিয়ানার ফল ত্রিশঙ্কু হওয়ার দিকেই এগোচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। সেরকম কিছু হলে ‘কিংমেকার’ হয়ে উঠতে পারেন জননায়ক জনতা পার্টির দুষ্মন্ত চৌটালা, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। প্রথম তিন দফার গণনার পর দেখা যাচ্ছে বেশ কয়েকজন বিজেপির মন্ত্রী তাঁদের নির্বাচনী এলাকায় পিছিয়ে রয়েছেন। বিশেষত, হরিয়ানার বিজেপি রাজ্য প্রধান সুভাষ বড়ালা পিছিয়ে রয়েছেন ১০ হাজার ভোটে, রাজ্যের অর্থমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অভিমন্যু পিছিয়ে রয়েছেন ৮ হাজার ভোটে, এবং ওপি ধানকড় পিছিয়ে রয়েছে ৭ হাজার ভোটে। বিজেপির কৃষাণ পানওয়ার এবং কবিতা জৈনও তাঁদের নিজেদের নির্বাচনী এলাকা ইসরানা এবং সোনিপথে পিছিয়ে রয়েছেন।
অন্যদিকে, হিসার জেলার উচনা কল্যান নির্বাচনী এলাকায় প্রাথমিকভাবে ১০ হাজারেরও বেশি ভোটে বিজেপির প্রার্থী প্রেম লতার থেকে এগিয়ে রয়েছেন জেজেপির দুষ্মন্ত চৌটালা। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে এই বিধানসভা কেন্দ্রেই প্রেম লতার কাছে পরাজিত হয়েছিলেন জননায়ক দলের প্রধান। উল্লেখ্য, প্রেম লতার পুত্র ব্রিজেন্দ্র সিং হিসার জেলার সাংসদ এবং স্বামী বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা উচনা কল্যাণ এলাকার চার বারের সাংসদ বীরেন্দ্র সিং। উল্লেখ্য, নির্বাচনের ফলের আগেই জেজেপি প্রধান দুষ্মন্ত চৌটালা জানিয়েছিলেন, এবারের নির্বাচনের ফলাফলে ত্রিশঙ্কু সরকার গঠিত হতে পারে। তিনি বলেছিলেন, বিজেপি বা কংগ্রেসের কেউই ৪০টি আসন অতিক্রম করতে পারবে না। সেক্ষেত্রে হরিয়ানায় সরকার গঠনের চাবিকাঠি থাকবে জেজেপির হাতে।
অন্যদিকে, হরিয়ানার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা ভূপিন্দর সিং হুডা রোহতকে নিজের বাড়ির সামনে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, কংগ্রেসই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৪৭টি আসনে জয় লাভ করেছিল বিজেপি, কংগ্রেস পেয়েছিল ১৫টি আসন। পরবর্তীতে হরিয়ানার জনহিত কংগ্রেসের দুই বিধায়কও যোগ দেন। আইএনএলডি পায় ১৯টি আসন এবং বহুজন সমাজ পার্টি এবং শিরোমণি অকালী দল পায় একটি করে আসন।
Be the first to comment