বারুইপুরে শুভেন্দুর উপর হামলার অভিযোগে বিধানসভা উত্তাল, ওয়াকআউট বিজেপি বিধায়কদের

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:- গতকাল বারুইপুরে শুভেন্দু অধিকারীর কর্মসূচি ঘিরে যে উত্তাপ ছড়িয়েছিল বৃহস্পতিবার তাঁর আঁচ পড়ল বিধানসভার অধিবেশনেও। বিরোধী দলনেতার উপর হামলা চালানোর অভিযোগে বিধানসভায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে শামিল হল বিজেপি বিধায়কেরা। বিধানসভার ভিতর কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। সেখান থেকে ওয়াকআউট করে বাইরে চলে আসেন বিধায়কেরা। বাইরে কাগজ ছিড়ে, কুশুপুতুল পুড়িয়ে চলে বিক্ষোভ। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠে। তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্রে শুভেন্দুর উপর হামলা হয়েছে বলে, অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি জানান বিজেপি বিধায়করা।

প্রসঙ্গত, বুধবার তৃণমূল এবং বিজেপি-র জোড়া কর্মসূচি ছিল বারুইপুরে। সেখানে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর গাড়ি পৌঁছলে তাঁর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা, দেখানো হয় কালো পতাকাও। সেই নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করেন শুভেন্দু। তাঁকে মেরে ফেলার চক্রান্ত হয়েছিল বলে দাবি করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “২০-২৫ বার মোটা বাঁশ, বাটাম দিয়ে মারা হয়েছে। গাড়ির বহু জায়গায় আঘাতের দাগ দেখতে পাবেন। মাথাটা আছে গাড়ির কাচ তোলা ছিল বলে। তোলাবাজ অভিষেক, তিনি পুলিশকে নির্দেশ দিয়ে এটা করেছেন। আমাদের ট্র্য়াপে ফেলেছেন। উদ্দেশ্য ছিল মেরে ফেলার।” বারুইপুরের ঘটনায় গতকাল নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণও করেন শুভেন্দু। এমন পরিস্থিতিতে বিধানসভা নির্বাচন কী করে সম্ভব, প্রশ্ন তোলেন তিনি। পাশাপাশি, রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবিও জানান। সেই আবহেই বৃহস্পতিবার বিধানসভার পাশাপাশি গোটা রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি।
এরপরই গতকালের ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালে বিধানসভা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিজেপি বিধায়করা বিধানসভায় বিক্ষোভ দেখান। এর পর ওয়াক আউট করে বিধানসভার বাইরে বেরিয়ে এসে বিক্ষোভ করেন। বিজেপি বিধায়কদের বৈঠকে শামিল রয়েছেন শঙ্কর ঘোষ, অগ্নিমিত্রা পালরা। রাস্তায় কুশপুতুলও পোড়ানো হয়। কাগজ ছেঁড়ার দায়ে স্পিকার বিরোধী দলনেতাকে সাসপেন্ড করলেও, এত বড় ঘটনায় তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া নেই বলে তোলা হয় অভিযোগ। বিমানের পদত্যাগ দাবি করা হয়।
বিধানসভার মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষ বলেন, “এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বার বার যে কথা বলেন, দলদাস স্পিকার। তাঁর এক চোখ বন্ধ থাকে। এই দলদাসের কাজ করতে গিয়ে গতকাল ওঁর বিধানসভা নির্বাচনী ক্ষেত্র বারুইপুরে বিরোধী দলনেতার গাড়ির উপর আক্রমণ হয়। আক্রমণ হয় ৫০ জন বিধায়কের গাড়িতে। পরিস্থিতি এমন হয় যে পুলিশ এবং দুষ্কৃতীদের মিলিত আঁতাতে বিরোধী দলনেতা-সহ বিরোধী বিধায়কদের প্রাণ চলে যেতে পারত। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? যে ঘটনা ঘটেছে কাল, তা সকলে দেখেছেন। আজ বিরোধী দলের পক্ষ থেকে স্পিকারের সামনে মাথা নীচু করে চেয়ারে বসি। কিন্তু মানুষ হিসেবে স্পিকার সাহেব কতখানি দলদাস, তা বুঝতে পেরেছেন আজ। তাই কাগজ ছিঁড়লেও যেখানে বিরোধী দলনেতাকে সাসপেন্ড করেন, দলের নির্দেশে চেয়ারের বিরুদ্ধ আচরণ করে এসেছেন, কথায় কথায় আসনের অবমাননার অভিযোগ তুলেছেন, আজ ওয়েলে নেমেছিলাম, মেরুদণ্ডহীন স্পিকারের ক্ষমতা হয়নি কিছু করার। আজ বিপরীতমুখী অবস্থান নিয়ে বসেছিলেন।”
এদিন বিধানসভায় বিক্ষোভ চলাকালীন বিমান কটাক্ষ করেন বিজেপি-কে। বিজেপি চেয়ারের জন্য মরিয়া, কিন্তু এবাবে চেয়ার পাওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেন তিনি। সে প্রসঙ্গে শঙ্কর বলেন, “গণতন্ত্রে চেয়ার কী ভাবে পাওয়া যায়, না যায়, তা জানি। স্পিকার সাহেবের মতো দলদাস হয়ে স্পিকারের আসনে বসার আগ্রহী বিজেপি-র কারও থাকবে না।”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*