রাজ্যজুড়ে বিজেপি কর্মীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মুরলিধর সেন লেনে রাজ্য দফতরের সামনে ধর্নায় বসেছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ছাড়াও উপস্থিত রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পাল, সায়ন্তন বসু ও জয়প্রকাশ মজুমদার।
ঘোষণা করা হয়েছিল আগেই। রাজভবনে যখন তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তখন কলকাতা দলের সদর দফতরে সামনে ধরনা দিল বিজেপি। এই কর্মসূচিতে যোগ দিলেন দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, শমীক ভট্টাচার্যের মতো দলের প্রথমসারির নেতারা।
কারণটা কী? ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে হিংসা ছড়িয়েছে রাজ্যে। বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি কর্মীকে হামলা করা হচ্ছে, পার্টি অফিসেও ভাঙচুর চলছে বলে অভিযোগ। গেরুয়াশিবিরের দাবি, এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের হামলার দলের ৬ জন কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। রাজ্যের কাছে ইতিমধ্যেই রিপোর্ট তলব করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। রাজ্যপালের কাছে ফোন করে বাংলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রীও।
উল্লেখ্য, নন্দীগ্রামে রেয়াত করা হচ্ছে না মহিলাদেরও! ভিডিও টুইট করেছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগ, নন্দীগ্রামের কেন্দামারি গ্রামে বিজেপির মহিলা কর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। প্রশ্ন তুলেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে আসল পরিবর্তন না করে এটাই কি সাধারণ মানুষের পাওনা’? ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তদন্তের দাবি করেছেন জাতীয় মহিলা কমিশনও।
আর এই হিংসার প্রতিবাদেই মমতার শপথের দিনে দেশজুড়ে ধরনায় বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। এদিন কলকাতার মুরলীধর সেন লেনে দলের সদর দফতরের সামনে মঞ্চ বেঁধে চলল ধরনা। মঞ্চে দেখা গেল বঙ্গ বিজেপির প্রথমসারির প্রায় সব নেতাকেই। ছিলেন দলের সাধারণ কর্মী-সমর্থকরাও।
এদিন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অভিযোগ করেন, মুরলিধর সেন লেনে দলের কার্যালয়ের সামনে মঞ্চ তৈরি হয়েছিল, পুলিশ সেটা ভেঙে দেয়। পুলিশের বক্তব্য, ওই রাস্তা দিয়ে নাকি অ্যাম্বুলেন্স যায়।যদিও, পরে সেখানেই ধর্নায় বসেন বিজেপি নেতারা।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন দিলীপ। কিন্তু, বিজেপি কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে তিনি সেই অনুষ্ঠান বয়কট করার কথা জানিয়ে দেন। বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, ভোটের পর আমাদের কর্মীদের ওপর একের পর এক আক্রমণ নেমে আসছে। এই সরকার আরও বেশি অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী পরিবেশ তৈরি করবে।
এর আগে, সোমবারই দিলীপ ঘোষ অভিযোগ করেন যে, রাজ্যজুড়ে বিজেপি কর্মীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে তৃণমূল। ঘরবাড়ি-দোকানঘর ভাঙচুর করা হচ্ছে। তাঁদের ছয় কর্মীকে খুন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
একইসঙ্গে দিলীপ দাবি করেন, আগে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হোক। তারপর হোক শপথ। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
Be the first to comment