বিজেপির নবান্ন অভিযান ঘিরে চড়ছে রাজনীতির পারদ। জোর প্রস্তুতি চলছে পদ্ম শিবিরের অন্দরে। নীল বাড়ির উদ্দেশে বিজেপির মিছিল যে জায়গাগুলি থেকে শুরু হবে, তার মধ্যে অন্যতম দু’টি হল সাঁতরাগাছি ও হাওড়া ময়দান। সেই মতো হাওড়া পুলিশের থেকে জমায়েতের অনুমতিও চাওয়া হয়েছিল পদ্ম শিবির থেকে। কিন্তু তাতে সায় নেই পুলিশের। হাওড়ার ডেপুটি পুলিশ কমিশনার এদিন চিঠি দিয়ে বিজেপিকে এই কথা জানিয়ে দিয়েছেন। কী কী কারণে এই দুই জায়গায় বিজেপির জমায়েতে পুলিশের সায় নেই, সেই কারণও উল্লেখ করা হয়েছে হাওড়ার ডেপুটি পুলিশ কমিশনারের পাঠানো ওই চিঠিতে।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, বঙ্গবাসী, হাওড়া ময়দান এবং জিটি রোড এলাকায় প্রচুর মানুষের ভিড় লেগে থাকে। প্রচুর গাড়ি ওই এলাকা দিয়ে যাতায়াত করে। এর মধ্যে অনেক স্কুলগাড়িও রয়েছে। পাশাপাশি মঙ্গলবার জিটি রোডের ধারে মঙ্গলা হাট বসে। সেখানেও বহু মানুষের ভিড় হয়। কেনা-বেচা করার জন্য বহু মানুষ আসেন এই মঙ্গলার হাটে। সেক্ষেত্রে বিজেপির নবান্ন অভিযানের জন্য জমায়েত হলে আমজনতার সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ।
শুধু হাওড়া ময়দানই নয়, সাঁতরাগাছি এলাকাতেও বিজেপির জমায়েতে সায় নেই পুলিশের। সাঁতরাগাছিতে কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে জমায়েতের পরিকল্পনা রয়েছে বিজেপির। কিন্তু পুলিশের বক্তব্য়, কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের অংশ। ফলে এই রাস্তা দিয়েও প্রচুর গাড়ি, বাস, মালবাহী যান যাতায়াত করে। অনেক অ্যাম্বুলেন্সও এই রাস্তা দিয়ে যায়। পাশাপাশি, জাতীয় সড়কের উপর কোনওরকম জমায়েতে আইনত অনুমতি দেওয়া যায় না বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০২০ সালে অক্টোবর মাসে বিজেপির যুব মোর্চা নবান্ন অভিযান ঘিরে যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির তৈরি হয়েছিল, সেই কথাও চিঠিতে উল্লেখ করেছে পুলিশ। বিশেষ করে সাঁতরাগাছিতে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে এবং হাওড়া ময়দানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। ওই ঘটনায় হাওড়া সিটি পুলিশের তরফ থেকে চারটি এফআইআর করা হয়েছিল, সেই কথাও জানানো হয়েছে পুলিশের তরফে।
এই বিষয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “এটি জনগণের আন্দোলন। এখানে জনগণ আন্দোলন করছে চোর ধরার জন্য। এর জন্য কোনওরকম অনুমতির প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না। জনগণ তাঁর হিসেব বুঝে নেবে। কারণ, জনগণের টাকা মন্ত্রীদের কাছের লোকেদের থেকে পাওয়া যাচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, বিজেপির নবান্ন অভিযান ঘিরে চূড়ান্ত ভোগান্তির আশঙ্কা করছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামিকাল সকাল থেকে হাওড়া শহরের বড়ো অংশ জুড়ে যান চলাচল বন্ধ থাকবে। নবান্নমুখী রাস্তা বন্ধ থাকবে। দ্বিতীয় হুগলি সেতু, কোনা এক্সপ্রেসওয়ে, হাওড়া ময়দানে জিটি রোড, সাঁতরাগাছি, আন্দুল কলেজ ঘাট রোড এবং ফোরশোর রোড সহ বিভিন্ন রাস্তায় ব্যারিকেড করে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে হাওড়া ব্রিজে যানচলাচল বন্ধ রাখা হতে পারে। কলকাতা যাতায়াতের জন্য বালি ব্রিজ ও নিবেদিতা সেতু ব্যবহার করতে হবে। সোমবার বিকেলে শরৎ সদনে পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা আইপিএস অফিসারেরা ও হাওড়া সিটি পুলিশের আধিকারিকরা।
Be the first to comment