
রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:- ফের উত্তপ্ত রাজ্য বিধানসভা। দোলের দিন বীরভূমে হিন্দুদের উপর হামলার প্রতিবাদে অধিবেশন মুলতুবির দাবি তুলে মুখ্যমন্ত্রী সহ সরকারের বিবৃতির দাবি তোলে বিজেপির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। সেই দাবি খারিজ করে দেয় বিধানসভার অধ্যক্ষ। এরপরই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ শুরু হয়। অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন বিজেপি বিধায়কেরা।
সাঁইথিয়ায় দোলের দিন হিন্দুদের ওপর হামলা ও তার জেরে বিস্তীর্ণ এলাকায় ইন্টারনেট বন্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ করে বিধানসভায় সরকারের বিবৃতি দাবি করল বিজেপি। মঙ্গলবার বিধানসভায় এই দাবি করেন বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক শংকর ঘোষ। এব্যাপারে মুলতুবি প্রস্তাব আনতে চাইলে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তা নাকচ করে দেন। এর পরই স্লোগান দিতে দিতে বিধানসভা থেকে ওয়াক আউট করেন বিজেপি বিধায়করা। বিধানসভার বাইরে তাঁদের সঙ্গে যোগদান করেন বিধানসভা থেকে সাসপেন্ডেড বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এর পর সরকার ও স্পিকারকে ফের তুমুল আক্রমণ করেন তিনি। এদিন ‘দলিত পরিবারের উপর আক্রমণ হল কেন মুখ্যমন্ত্রী জবাব দাও’। ‘সাঁইথিয়ায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ কেন মুখ্যমন্ত্রী জবাব দাও।’ স্লোগান দিতে দিতে বিজেপি বিধায়করা বিধানসভা থেকে ওয়াক আউট করেন। এর পর বিধানসভার বাইরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন তাঁরা।
বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী পক্ষের মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষকে ওই মুলতুবি প্রস্তাবের আংশিক পাঠের অনুমতি দেন। শঙ্কর বাবু বলেন, দোল উৎসবে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যে অশান্তি হয়েছে তাতে মানুষের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে। আলোচনার অনুমতি না দেওয়া হলে অন্তত সরকারপক্ষ বিধানসভায় যেন এনিয়ে বিবৃতি দেন শঙ্কর বাবু অধ্যক্ষের কাছে সেই দাবি জানান। অধ্যক্ষ পাল্টা বলেন, ইতিমধ্যেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উপর বিধানসভায় দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে বিবৃতি দিয়েছেন। সুতরাং পুনরায় এনিয়ে আলোচনার প্রয়োজন নেই। একথা শুনেই বিজেপি সদস্যরা সভায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সরকার হিন্দু বিরোধী বলে স্লোগান তোলেন তাঁরা। পাল্টা ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পাল্টা স্লোগান দিতে শুরু করেন সরকার পক্ষের একাধিক মন্ত্রী বিধায়ক। স্লোগান পাল্টা স্লোগানকে কেন্দ্র করে উত্তাপ ছড়ায়। বেশ কিছুক্ষন এরকম চলার পর শঙ্কর ঘোষের নেতৃত্বে বিজেপি সদস্যরা সভা থেকে ওয়াকআউট করে।
এর পর শুভেন্দু বাইরে বলেন, ‘বীরভূমের সাঁইথিয়ায় পাঁচটি গ্রামে গত ১৪ তারিখ থেকে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ। লাগু রয়েছে ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা। এর জবাব মুখ্যমন্ত্রীকে বিধানসভায় এসে দিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী ও তার বিধায়কেরা বিধানসভাকে প্রহসনে পরিণত করেছেন। বিধানসভায় লাইভ স্টিমিং হবে না কেন? বিধানসভার ভেতর ক্যামেরা অনুমতি নেই কেন?’ তিনি আরও বলেন, মণিপুর, গোয়ার মতো ছোট রাজ্যেও বিধানসভার আলোচনা লাইভ স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে দেখা যায়। একমাত্র পশ্চিমবঙ্গ, যেখানে বিধানসভায় কী আলোচনা হচ্ছে তা মানুষ জানতে পারে না। কারণ, এখানে লাইভ স্ট্রিমিং হয় না। কীসের ভয়?” এরপর শুভেন্দু অধ্যক্ষকে আক্রমণ করে বলেন, ‘স্পিকারের একটা চোখ খোলা একটা চোখ বন্ধ। তিনি একচোখা। আগামিকাল বারুইপুরে ভারতীয় জনতা পার্টির সমস্ত বিধায়কেরা যাবেন। ওখানকার বিধায়ক বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেলেঙ্কারির ইতিহাস তোলা হবে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে।
Be the first to comment