রোজদিন ডেস্ক :- হাওড়া স্টেশনে ট্রেনের কামরা থেকে উদ্ধার হল এক ব্যক্তির রক্তাক্ত মৃতদেহ। জানা গিয়েছে, কাটিয়ার এক্সপ্রেস হাওড়া এসে পৌঁছনোর পর প্রতিবন্ধী কামরা থেকে ওই ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হয়েছে। মৃত ব্যক্তির নাম সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। তিনি পেশায় তবলা বাদক। তাঁর শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে জিআরপির অনুমান ওই ব্যক্তিকে খুন করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে জিআরপি।
জিআরপি সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে হাওড়া স্টেশনে এসে পৌঁছয় কাটিহার এক্সপ্রেস। এরপর ট্রেনের কর্মীরা প্রতিবন্ধী কামরার উপরের বাঙ্কে সৌমিত্রর রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান। তাঁর মৃতদেহ চাদর চাপা দেওয়া ছিল।
পরিবার সূত্রে খবর, হাওড়ার বালির ঘোষপাড়ার বাসিন্দা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় কাটিহারে তবলার তালিম দিতে যেতেন। সোমবারও রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ কাটিহার থেকে ট্রেনে উঠে স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ ট্রেন হাওড়া স্টেশনে ঢোকে। এর পরই ট্রেনের বাঙ্কে সৌমিত্রর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
নিহতের স্ত্রী জানান, ১২ বছর কাটিহার রামকৃষ্ণ মিশনের তবলার শিক্ষক ছিলেন সৌমিত্র। সেখানে মিশনের বাইরেও অনেককে তবলা শেখাতেন। অবসর নেওয়ার পরও নিয়ম করে ক্লাস করাতেন কাটিহারে। সেখানেই গিয়েছিলেন সোমবারও।
তাঁর স্ত্রীর বক্তব্য, ‘আমি মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বার বার ফোন করছি, ফোন সুইচড অফ বলছে। এর পর ছেলেকে বললাম। ছেলেও ফোনে না পাওয়ায় আমার ভাইকে বলি। কেউই পায়নি। এর পর হাওড়ায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারি কাটিহার- হাওড়া ট্রেন থেকে একটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। কখন, কী হয়েছে জানি না। আধার কার্ড দেখে দেহ শনাক্ত হয়। শরীর ক্ষত বিক্ষত। মনে হয় ঘুষি মেরেছিল, দাঁত ভাঙা। গালে ছুরির দাগ।’
তবে কী ভাবে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হল সেবিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয় তদন্তকারীদের কাছে। হাওড়া জিআরপির আধিকারিকদের দাবি, ব্যক্তির দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ফলে তাঁকে খুনের তত্ত্ব জোরদার হচ্ছে। তবে আদৌও ওই ব্যক্তিকে খুন করা হয়েছে নাকি অন্য কারণে মৃত্যু হয়েছে তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে মনে করছে জিআরপির তদন্তকারী দল। আঘাতের চিহ্নগুলি কী ভাবে এল? তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে স্পষ্ট হতে পারে। সেই অনুযায়ী তদন্ত করবে জিআরপি। বিহারের কাটিহার থেকে শুরু করে হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত যেখানে যেখানে ট্রেনটি থেমেছে সেই সব স্টেশনগুলির কথাও মাথায় তদন্ত চালিত করছে জিআরপি। যদি এটি খুনের ঘটনা হয়ে থাকে তাহলে এটি কোনও আততায়ীর কাজ কিনা? অথবা ওই ব্যক্তির পূর্ব পরিচিত কিনা সে সব তথ্য জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। এদিনের ঘটনাকে কেন্দ্র ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। প্রশ্ন উঠেছে ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে।
Be the first to comment