আস্থা ভোট ঘিরে রণক্ষেত্র হয়ে উঠলো বনগাঁ পুরসভা এলাকা। পৌরসভা চত্বরে বোমাবাজি। ঘটনায় জখম ২। এদিকে বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। কাঁদানে গ্যাসের শেলও ফাটানো হয়। ঘটনায় জখম বনগাঁর SDPO অশেষ ঘোষ দস্তিদার।
জানা গিয়েছে, আজ বেলা ৩টে ১৫ নাগাদ বনগাঁ পৌরসভার পৌরপ্রধান শংকর আঢ্য ৯ জন তৃণমূল কাউন্সিলরসহ বাইরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দাবি করেন, তাঁরা ভোটে জিতে গিয়েছেন। আস্থাভোটে বিজেপির কোনও কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন না। অন্য কাউন্সিলররা জানান, তাঁরা শংকর আঢ্যকে চেয়ারম্যান হিসেবে সমর্থন করছেন। এর ঠিক কিছুক্ষণ পর বিজেপির পক্ষ থেকে পালটা দাবি করা হয় তৃণমূলের কোনও কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন না। তাদের ১১ জন কাউন্সিলরই আস্থা ভোটে অংশগ্রহণ করেন। তারাই জিতেছেন। এরপরই শুরু হয় অশান্তি। বিজেপির অভিযোগ তাদের কাউন্সিলরদের একটা ঘরে তালাবন্ধ করে রেখে দেওয়া হয়। তাদের দাবি ১১-০ ভোটে জিতেছে তারা। তবে পরবর্তীকালে আবার তৃণমূল পৌরসভা দখল করলে আইনের পথে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিজেপি।
বনগাঁ পৌরসভায় মোট ২২টি টি ওয়ার্ড। যার মধ্যে সিপিআই(এম) ও কংগ্রেসের দখলে একটি করে এবং তৃণমূলের দখলে ২০টি ওয়ার্ড রয়েছে। কিছুদিন আগে তৃণমূল কংগ্রেসের কয়েকজন কাউন্সিলর পৌরপ্রধান শংকর আঢ্যর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে। তারপর তৃণমূল থেকে ১১ জন কাউন্সিলর বিজেপিতে যোগ দেয়। যাদের মধ্যে দু’জনের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ আনে এক বিজেপি মহিলা কর্মী। গতকাল আগাম জামিনের আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় হিমাদ্রি মণ্ডল ও কার্তিক মণ্ডল নামে ওই দু’জন। হাইকোর্ট জানায়, আগামী এক সপ্তাহ দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। এই নির্দেশের পর তারা দু’জন আজ ভোট দিতে যায় বনগাঁ পৌরসভার আস্থা ভোটে।
কিন্তু মামলা চলছে তাই ভোট দেওয়া যাবে না, এই কথা বলে বনগাঁ পৌরসভায় তাদের ঢুকতে বাধা দেয় পুলিশ। আর সেই নিয়েই পুলিশ ও বিজেপি কাউন্সিলরদের মধ্যে বচসা বাধে। পুলিশ জানায় এক ঘণ্টার মধ্যে হাইকোর্টের নির্দেশের হার্ড কপি আনতে হবে। হোয়াটস অ্যাপে পাঠানো কোনও নথি তারা দেখবে না।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, আস্থা ভোটকে ঘিরে যে কোনওরকম রাজনৈতিক অশান্তি এড়াতেই আজ ১৪৪ ধারা জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শহরের বিভিন্ন এন্ট্রি ও এগজিট পয়েন্ট ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেয় পুলিশ। কিন্তু এই বচসার জেরে তৃণমূল ও বিজেপি উভয়ই ১৪৪ ধারা ভাঙে। এখনও পৌরসভা চত্বরে উত্তেজনা চলছে।
আস্থাভোটে এগজিকিউটিভ অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন গৌরাঙ্গ বিশ্বাস। আস্থা ভোটের ফলাফল নিয়ে তিনিও মুখ খুলতে চাননি।
Be the first to comment