কালীপুজোর বিসর্জনে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। যার জেরে মৃত্যু হয়েছে এক যুবকের। গতকাল, শুক্রবার নৈহাটিতে বড়মা’র নিরঞ্জনের সময় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে মৃত্যু হয় বছর ৩২-এর জয়দেব মণ্ডলের। মৃতের বাড়ি নৈহাটির কেওড়াপাড়ায়।
নৈহাটির বড়মা’র আরাধনা বিখ্যাত। বড়মা জাগ্রত বলেই মনে করা হয়। তাই নিরঞ্জনে বড়মাকে গঙ্গা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার সবটাই পথ ছিল লোকে লোকারণ্য। রাস্তার দু’ধারে বাড়ির বারান্দা, ছাদ— সব জায়গায় উপচে পড়া ভিড়। তারই মধ্যে জয়দেব মণ্ডল বড়মা’র শোভাযাত্রা ভালোকরে দেখার জন্য রাস্তার ধারে পুরসভার শৌচালয়ের ছাদে আরও অনেকের মতো উঠে পড়েছিল। তখনই বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে শৌচালয়ের উপর। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন জয়দেব। তাঁকে নিকটবর্তী মাতৃসদনে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি।
এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন নৈহাটির বিধায়ক তথা রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। তিনি বলেন, বড়মাকে দর্শন করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন ওই যুবক। খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এবার বড়মার পুজো দেখতে এবং বিসর্জনে যা ভিড় হয়েছে, তা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।
শুধু জয়দেবের মৃত্যু নয়, বড়মা’র বিসর্জন দেখতে যেভাবে মানুষ ভিড় করেছিলেন এই শহরে, তাতে পদপিষ্ট হওয়ার সম্ভবনা ছিল প্রবল। এক সময় ভিড়ের চাপ সামলাতে গিয়ে নাজেহাল হতে হয় পুলিশকে।
প্রসঙ্গত, বড়মা’র বিসর্জনকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার মানুষের ভিড় করেছিলেন। রীতি অনুযায়ী সকালে দধিকর্মার পর ঘট বিসর্জন হয়। তারপর মাকে রাজবেশে সাজানো হয়। শুক্রবার বিকেল ৪টের কিছু পর শুরু হয় শোভাযাত্রা। সেই সময় ভিড়ের চাপ ও হুড়োহুড়িতে অনেক জায়গায় রাস্তার ধারের ব্যারিকেড ভেঙে পড়ে। পুলিশ জনতাকে সামলাতে হিমশিম খেয়ে যায়। তখন পদপিষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। নৈহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক চট্টোপাধ্যায় ফেরিঘাটের মঞ্চ থেকে বারে বারে অনুরোধ করেন, বড়মাকে ধীরে ধীরে আসতে দিন। কেউ গঙ্গায় নামবেন না, হুড়োহুড়ি করবেন না। কিন্তু কার কথা কে শোনে! শেষ অবধি বিকেল ৫টা নাগাদ বিসর্জন হয় বড়মার। এই বিসর্জন পর্ব শেষ হওয়ার পর অন্যান্য কালীপ্রতিমা বিসর্জন হয়।
Be the first to comment