বসনিয়ার সাধারণ নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্ত নিলো পোডগোরার বাসিন্দারা; পড়ুন!

Spread the love
প্রত্যেক ভোটের আগে প্রার্থীদের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি শুনতে শুনতে অতিষ্ঠ তাঁরা। এবার আর কোনও নেতাকে তাঁদের এলাকায় ঢুকতেই দেবেন না তাঁরা। গ্রামের মোড়ে সে কথা বড় বড় লিখে ব্যানারও টাঙিয়ে দিয়েছে তারা।
বসনিয়ার রাজধানী থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরের ছোট্ট গ্রাম পোডগোরা। আগামি রবিবার বসনিয়ায় সাধারণ নির্বাচন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে সেদিন। প্রার্থীরা এখন ব্যস্ত শেষ মুহূর্তের প্রচারে। কিন্তু ৭০০ বাসিন্দার পোডগোরায় তাদের প্রবেশাধিকার নেই।
গ্রামের বড় মোড়ে টাঙানো ব্যানারে স্পষ্ট লেখা, ‘বছরের পর বছর ধরে আপনারা মিথ্যাচার করেছেন। পোডগোরায় কোনো দলকে স্বাগত জানানো হবে না’। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও যারা নিজেদের পোস্টার সেঁটেছিল, তাদের পোস্টারগুলো তুলে ফেলতে দেরি করেনি স্থানীয়রা। কেউ একজন ব্যানারের পেছন দিকে স্প্রে ক্যান দিয়ে আরো লিখে রেখে গেছে, ‘পড়েননি এটা? লোকে আপনাদের আর সহ্য করবে না।’
রাজনীতিকদের প্রতি পোডগোরাবাসীর অনাস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে ৫০ ইউরো মূল্যের ওই ব্যানার তৈরিতে তারা সবাই অর্থ দিয়েছে। সবজি আর গবাদি পশুর ছোট ছোট খামারই গ্রামবাসীর জীবনধারণের ভরসা। ৪৭ বছর বয়সী আদি সিলাজজিক বলেন, ‘অনেক মিথ্যাচার হয়েছে! প্রত্যেকবার তারা আসে, ভোট পাওয়ার জন্য নানারকম কাহিনি শোনায় আর প্রতিশ্রুতি দেয়। আমরা বিরক্ত।’
পোডগোরাবাসী জানায়, তারা এমন এক গ্রামে বাস করে, যেখানে নষ্ট সড়ক বাতিগুলো তাদের নিজেদেরই পাল্টে নিতে হয়। এখানে আবর্জনা ফেলার জন্য একটি কনটেনারও নেই, যাতায়াতের জন্য নেই কোনও বাস। জলের পাইপ বসানো হয়েছিল ১৯৯০ দশকের যুদ্ধের আগে। সেগুলো কখনো পাল্টানো হয়নি বা কোনও সংস্কার হয়নি। বৃষ্টি হলেই গ্রামের রাস্তাগুলো কাদায় প্যাচপেচে হয়ে যায়।
১৯৯০ দশকের যুদ্ধে বসনিয়ায় এক লাখ লোক নিহত হয়। দুটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে ভাগ হয়ে যায় দেশ। নিদারুণ বেকারত্বের এ দেশে ২০ শতাংশেরও কম মানুষের নেতাদের ওপর আস্থা আছে। ভোটেও এখন মানুষের আর আগ্রহ নেই। ৪৩ বছর বয়সী নির্মাণ শ্রমিক ভেদাদ সিলাজজিক বলেন, ‘আমরা একবার এ দলকে ভোট দিই তো আরেকবার আরেক দলকে। কিন্তু সব একই রকম রয়ে গেছে। তারা (রাজনীতিক) সবাই এক। তারা চেয়ারের জন্য যুদ্ধ করে আর চেয়ারটা পেয়ে গেলেই জনগণের কথা ভুলে যায়।’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*