হাতে ধরে রয়েছেন কুলদেবতাকে, সঙ্গে ব্যাগ-পত্র। কোথায় যাবেন, তার কোনও ঠিক নেই। কিন্তু হোটেলে যাবেন না কিছুতেই। এমনটাই বক্তব্য় বউবাজারের বাসিন্দাদের। এদিন ভোররাতেই বউবাজারের মদন দত্ত লেনের ১০টি বাড়িতে ফাটল ধরে। তারপর থেকেই ঘরছাড়া বাসিন্দারা। হাতের সামনে যেটুকু শেষ সম্বল পেয়েছিলেন, তা ভরে নিয়েছেন ব্যাগে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো রেলের কাজের কারণেই এই বাড়িগুলিতে ফাটল ধরেছে বলে জানা গিয়েছে। বাড়ি ভেঙে পড়ার আতঙ্কে ভোরবেলা থেকেই পথে বসে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
২০১৯ সাল থেকেই ফাটল আতঙ্ক শুরু হয়েছে বউবাজারে। ২০১৯ সালে একাধিক বাড়িতে ফাটল, ভেঙে পড়ার পর চলতি বছরের মে মাসেও একইভাবে ফাটল ধরে ১১টি বাড়িতে। আজ আবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ বাড়িতে ফাটল ধরতেই বাড়ির বাসিন্দা রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। তারপর থেকেই রাস্তায় বসে তাঁরা। কেউ কেউ ব্যাগ-পত্র গুছিয়ে রওনা দিয়েছেন আত্মীয়-স্বজন বা পরিচিতের বাড়ির উদ্দেশে। আর যেখানেই যান না কেন, গতবারের মতো আর হোটেলে যাবেন না বলেই জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
পুলিশি ব্যারিকেডের মাঝে চোখে জল নিয়ে বসে থাকা স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বারংবার এই পরিস্থিতির শিকার হয়ে অসহায়বোধ করছেন। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “সাড়ে চারটে নাগাদ একটি শব্দ হয়। দেখতে পাই বাড়িতে ফাটল ধরেছে। পৌনে পাঁচটা থেকেই রাস্তায় বসে রয়েছি। কোথায় নিয়ে যাবে, কিছু জানি না”। আরেক বাসিন্দা বলেন, “পুরো বাড়ি ফাঁকা। বাচ্চা-বয়স্কদের নিয়ে ভোরবেলা থেকেই রাস্তায় বসে রয়েছি।”
তৃতীয়বার ফাটল ধরার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বউবাজারের মদন দত্ত লেনের স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা সাফ জানিয়েছেন, মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই এই ঘটনা ঘটেছে। বারংবার বাড়িতে ফাটল ধরায় তাদের প্রাণ সংশয়ের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হওয়া অবধি তাঁরা এলাকা ছেড়ে কোথাও যাবেন না। মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে হোটেলে থাকার ব্য়বস্থা করা হলেও, সেখানে যেতে নারাজ তাঁরা, এমনটাই জানিয়েছেন।
Be the first to comment