সরকারি অফিসাররা অনেকে হাতের মুঠোয়। একের পর এক সরকারি প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা হাতানোর সুযোগ। মুজফফরপুরে বালিকাদের শেল্টার হোমে ধর্ষণের খবর জানাজানি হতে সংশ্লিষ্ট এনজিও-র কর্তা ব্রজেশ ঠাকুরের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে তদন্ত। তাতেই জানা গিয়েছে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ বলেছে, রীতিমতো সেক্স র্যাকেট চালাত ব্রজেশ। তা দিয়েই বশ করেছিল দুর্নীতিপরায়ণ অফিসারদের। অনাথ আশ্রমের বালিকাদের যৌন ব্যবসায় কাজে লাগানো ছিল তার পেশা।
গত মে মাসে টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেসের কর্মীরা মুজফ্ফরপুরের ওই হোমে সমীক্ষা করে রিপোর্ট দেন, সেখানে নিয়মিত বালিকাদের ধর্ষণ করা হয়। তদন্তে জানা যায়, সেখানে অন্তত ৩৩ টি মেয়েকে নিয়মিত মাদক দেওয়া হত ও ধর্ষণ করা হত।
কিছুদিনের মধ্যে মামলার তদন্তের দায়িত্ব নেবে সিবিআই। পুলিশ সিবিআইয়ের কাছে জমা দেওয়ার জন্য একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, মুজফরপুরের ওই হোম যে চালাত, সেই ব্রজেশ ঠাকুরের বেশ কয়েকটি এনজিও আছে। তাদের মাথায় আছে ব্রজেশের আত্মীয়রা। সে নিজেকে সাংবাদিক বলে পরিচয় দিত। সমস্তিপুরে সাহারা নামে এক বৃদ্ধাবাস পরিচালনার দায়িত্ব যাতে তাকেই দেওয়া হয় সেজন্য কয়েকজন সরকারি অফিসার তার নাম সুপারিশ করেছিলেন। যদিও ওই দায়িত্ব পাওয়ার যোগ্যতা ব্রজেশের ছিল না।
বিহার স্টেট এইডস কন্ট্রোল সোসাইটি থেকে ব্রজেশকে এমন কয়েকটি প্রকল্পের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল যা চালানোর যোগ্যতাও তার ছিল না। পুলিশের ধারণা, সে দুর্নীতিগ্রস্ত অফিসারদের কাছে মেয়েদের পাঠাত। ওইভাবে নিজের কাজ হাসিল করেছিল।
এই প্রসঙ্গে মধু কুমারী নামে ব্রজেশের এক সহায়িকার নামও জানা গিয়েছে। সে নিজে একসময় যৌনকর্মী ছিল। পরে ব্রজেশের মূল পয়েন্টসম্যান হয়ে ওঠে। তার কাজ ছিল ব্রজেশের হয়ে বিভিন্ন যৌনপল্লীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা। সে আবার বামা শক্তি বাহিনী নামে ব্রজেশের এক এনজিও-র কর্ত্রী ছিল।
যৌন ব্যবসায় নামানোর জন্যই মুজফফরপুরে অনাথ বালিকাদের জন্য হোম চালাত ব্রজেশ। নেপাল ও বাংলাদেশেও তার ব্যবসার জাল বিস্তৃত ছিল বলে জানা গিয়েছে।
Be the first to comment