সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার পেলেন নাট্য়কার ব্রাত্য বসু। রাজ্যের শিক্ষা দফতরের মন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে এ বছরের সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত তাঁর ‘মিরজাফর ও অন্যান্য নাটক’ গ্রন্থটির জন্য। যে ২০টি ভাষার সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার ঘোষিত হয়েছে, তার মধ্যে ব্রাত্যবাবুর বইটি ছাড়া আরও একটি নাটকের বই পুরস্কৃত হয়েছে। সেটি হিন্দিতে রচিত, নাট্যকার দয়াপ্রকাশ সিনহা পুরস্কার পেয়েছেন ‘সম্রাট অশোক’ নাট্যগ্রন্থটির জন্য।
অশালীন থেকে হেমলাট, দ্যা প্রিন্স অফ গরানহাটা, দর্জিপাড়ার মর্জিনারা, কৃষ্ণগহ্বর, ১৭ই জুলাই, ভয়, রুদ্ধসঙ্গীত। তারপর একে একে বোমা, মিরজাফর-র মতো কালজয়ী নাটক সৃষ্টি হয়েছে একদা অধ্যাপক ব্রাত্যর কলমে। ধীরে ধীরে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর নাট্যসমগ্রও। শুধু তাই নয়, বাংলার নাট্যজগতের ব্যবস্থাপনা ও অর্থনীতিক পরিকল্পনার দিকটি নিয়ে তিনি লিখেছেন একাধিক প্রবন্ধ ও তৈরি করেছেন নীতি। কোম্পানি থিয়েটারের আদর্শে বাংলা গ্রুপ থিয়েটারকে নতুন ধাঁচে তৈরি করতে চেয়েছেন ব্রাত্যই। প্রথমে গণকৃষ্টির হয়ে অশালীন, অরণ্যদেব, ১৭ই জুলাইয়ের মতো নাটক তৈরি হয়েছে ব্রাত্যর হাতে। লোককৃষ্টি দলে তাঁর লেখা পেজ ফোর সাফল্যের সঙ্গে দীর্ঘদিন অভিনীত হয়েছে। এর পর কালিন্দী ব্রাত্যজনের রুদ্ধসঙ্গীত থেকে একে একে কে, বোমা, সিনেমার মতো বক্স অফিসে কার্যত ঝড় তুলেছিল।
শুধু তাই নয়, কলকাতা ও উপকণ্ঠের বিভিন্ন পরিচালক ও দল কাজ করেছেন ব্রাত্যর নাটক নিয়ে। দেবেশ চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত ব্রাত্য বসু লিখিত উইঙ্কল টুইঙ্কল বাম জমানায় প্রতিবাদের স্বর হয়ে উঠেছিল কার্যত। জনপ্রিয়তাও ছিল চরমে। ব্রাত্য একাধিক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি সিনেমা হয়েছে এমন কোনও প্রকল্পকে নাট্য মঞ্চে তুলে আনতে চান। এনেওছিলেন। ঋত্বিক ঘটকের মেঘে ঢাকা তারা মঞ্চে তৈরি করেছিলেন তিনি।
শুধু একজন নাটক লিখিয়েই নয়, এক জন পরিচালক, অভিনেতা, নাট্য জগতের দক্ষ সংগঠক হিসাবে বারবার শম্ভু মিত্র, উৎপল দত্ত, বাদল সরকার পরবর্তী বাংলা নাটকে নক্ষত্রের মতো উঠে এসেছেন তিনি। তাঁর লেখনি সংলাপকে বার করে এনেছে নরম, তুলতুলে শব্দবন্ধের আবরণ থেকে। অনুবাদ নাটকেও তাঁর কলমের জোর নতুন করে বারবার শ্রেষ্ঠত্বের দাবি করেছে। জনতার স্বীকৃতি তিনি আগেই পেয়েছিলেন, এ বার পেলেন সাহিত্য অ্যাকাডেমি।
Be the first to comment