একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেডে সমাবেশের ডাক দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে দিন আসতে এখনও মেলা বাকি! কিন্তু তাতে কী! দিদি-র সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্রিগেডের প্রচার শুরু করে দিল তৃণমূল।
ব্রিগেডের প্রস্তুতিতে এরই মধ্যে নেমে পড়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চার দিনের দিল্লি সফরে গিয়েছিলেন মমতা। শরদ পওয়ার, অরবিন্দ কেজরীবাল, জয়া বচ্চন সহ বিরোধী শিবিরের নেতাদের জনে জনে বলেছেন, ব্রিগেডের সভা ডেকে দিয়েছি। ওই দিন কলকাতায় আসা চাই। সূত্রের মতে, দশ নম্বর জনপথে গিয়ে সনিয়া-রাহুলের সঙ্গে বৈঠকের পর তাঁদেরও ব্রিগেডে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। এমনকী শিবসেনা সাংসদ তথা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউতকেও ব্রিগেডে সভায় সামিল হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন মমতা।
দিদি যখন এতটাই সক্রিয়, তখন দলই বা পিছিয়ে থাকবে কেন!
উত্তর কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় শুক্রবার সকালে দেখা গেল ব্রিগেডের প্রচারে হোর্ডিং লাগানো শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। শ্যামপুকুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজার উদ্যোগে দর্জিপাড়া, সেন্ট্রাল অ্যাভেনিউ সহ উত্তর কলকাতার বড় রাস্তা, মেজো রাস্তায় হোর্ডিংয়ে ছেয়ে ফেলা হয়েছে। বিক্ষিপ্ত ভাবে দক্ষিণ ও উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি মফস্বল এলাকাতেও ব্রিগেডের পোস্টার পড়তে শুরু হয়েছে।
বিজেপি অবশ্য তা নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না। দলের এক রাজ্য নেতা খোঁচা দিয়ে বলেছেন, সিভিল সার্ভিসেস পরীক্ষার জন্যও বোধহয় কেউ এতো আগে থেকে প্রস্তুতি শুরু করে না। তৃণমূলের মধ্যে ভয় ঢুকে গিয়েছে।
তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, ব্যাপারটা দেখে অনেকে অবাক হলেও বলা যেতে পারে এও মমতার এক কৌশল। ৬ মাস আগে কেন ব্রিগেডের সভার দিন ঘোষণা করে দিলেন সেটাও ভাবতে হবে! বস্তুত ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেডে কী হবে তা এই মুহূর্তে অপ্রাসঙ্গিক। ওই ক্যালেন্ডার সামনে ঝুলিয়ে দিয়ে মমতা আসলে গোটা দলকে ভোটমুখী করে দিলেন। এই যে একটি দুটি করে ব্রিগেডের পোস্টার পড়তে শুরু করেছে, তা মাস খানেকের মধ্যে ভাইরাল হবে। সাধন পাণ্ডে, শশী পাঁজা, পরেশ পাল, সুজিত বসুর মতো উত্তর ও পূর্ব কলকাতার বিধায়ক থেকে শুরু করে জেলার নেতারা নিজেদের মধ্যে পাল্লা দিয়ে ব্রিগেডের হোর্ডিং কাট আউট লাগাতে শুরু করে দেবেন। উনিশের ভোটের দিকে তাকিয়ে গোটা দল এখন থেকেই ওয়ার্ম শুরু করে দেবে। মমতা সম্ভবত এটাই চেয়েছিলেন।
Be the first to comment