নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ

Spread the love

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে এবারে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগের (আইইউএমপিএল)। এই বিলের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে যাওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিল তাঁরা। আর বুধবার এই বিল রাজ্যসভায় পাস হতেই আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এই সংগঠনটি। এই মামলা প্রসঙ্গে (আইইউএমপিএল)-এর সাংসদ পিকে কুনহালিকুট্টি জানান, এই বিল সংবিধানের মৌলিক অধিকারের বিরোধী। তাই এই বিলের প্রতিবাদে আদালতে যাবেন তাঁরা। এই বিলের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা লড়বেন কংগ্রেস নেতা তথা সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী কপিল সিব্বল।

মঙ্গলবারই এই বিষয় নিয়ে আইইউএমএল নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছেন কপিল সিব্বল। এই প্রসঙ্গে কপিল সিব্বল বলেন, ‘শুধুমাত্র বেছে বেছে ওই ছয়টি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের কথাই কেন উল্লেখ করা হয়েছে? মুসলিম সম্প্রদায়ের কোনও উল্লেখ নেই কেন? এই বিষয় নিয়েই শীর্ষ আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

বুধবার লোকসভার পর রাজ্যসভাতেও পাশ হয়ে যায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি)। ভোটাভুটিতে বিলের পক্ষে ১২৫টি ভোট পড়ে। বিপক্ষে ভোট ১০৫টি ভোট পড়ে। এ বার রাষ্ট্রপতি সই করলেই এই বিল আইনে পরিণত হবে। মূল এই ভোটাভুটির আগে বিল সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হবে কি না, তা নিয়ে ভোটাভুটি হয়। মোট ১৪টি সংশোধনীর জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিভিন্ন দলের সাংসদরা। কিন্তু ভোটাভুটিতে সবকটিই খারিজ হয়ে গিয়েছে।

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে রাজ্যসভায় জোর বিতর্ক হয়। সোমবার লোকসভায় পাশ হওয়ার পর গতকাল বুধবারই রাজ্যসভায় পেশ হয় এই বিল। তা নিয়ে তুমুল বিতর্ক হয় শাসক ও বিরোধী পক্ষের সাংসদের মধ্যে।

এ দিন রাজ্যসভায় আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনে অমিত শাহ দাবি করেন, ‘লাখ লাখ মানুষের সঙ্গে ধর্মীয় প্রতারণা হয়েছে। এই বিলের মাধ্যমে সেই সব শরণার্থীদের অধিকার দেওয়া হবে।’ এ দেশে বসবাসকারী মুসলিমদের আশঙ্কার কোনও কারণ নেই আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সন্ধ্যার দিকে জবাবি বক্তৃতায় অমিত শাহ বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশে এই বিল আনা হয়নি। আগের সরকার বিষয়টির যথাযথ মোকাবিলা করতে পারেনি।

বিরোধী কংগ্রেসের পক্ষে বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়ে আনন্দ শর্মা বলেন, ‘এই বিল ভারতের আত্মার উপরে আঘাত।’ বিল নিয়ে বিজেপি কেন তাড়াহুড়ো করছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। সেই সঙ্গে দেশ ভাগের জন্য কংগ্রেস দায়ী বলে অমিত শাহ লোকসভায় যে অভিযোগ করেছিলেন তারও জবাব দিয়েছেন আনন্দ শর্মা। দেশ ভাগ নিয়ে সরাসরি হিন্দু মহাসভা এবং মুসলিম লিগকে দায়ী করেছেন তিনি। অমিত শাহের কথার সূত্র ধরেই বিজেপিকে তোপ দেগেছে তৃণমূল কংগ্রেসও। নোটবন্দির কথা তুলে দলের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘আপনারা আশ্বাস দিলেও, সিএবি নিয়ে আশঙ্কার কারণ আছে। কারণ, নোটবন্দির সময়েও প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তার ফল কী হয়েছে তা সবাই জানেন।’ এরপরের দিনই এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*