কোচবিহারে তৃণমূল কর্মী খুনে সিবিআই-এর জালে ৪ বিজেপি কর্মী

Spread the love

ভোট-পরবর্তী হিংসায় কোচবিহারের চিলাখানায় তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় অবশেষে চার বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করল সিবিআই। যদিও বিজেপি কর্মীদের ফাঁসানো হয়েছে ও তাঁরা নির্দোষ প্রমাণিত হবে বলে দাবি জানিয়েছেন দলের জেলা সভানেত্রী ও তুফানগঞ্জের বিধায়ক মালতী রাভা। চিলাখানায় তৃণমূল কর্মীর খুনের ঘটনাটি দলের গোষ্ঠীকোন্দলের ফল বলেও দাবি জানিয়েছেন তিনি।

একইসঙ্গে সিবিআই-এর কাছে নিরপেক্ষ তদন্তের আবেদন জানিয়ে বিজেপি বিধায়ক বলেন, ‘বিজেপি কর্মী খুনে দিনহাটার একজন ছাড়া এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। প্রতিটি অপরাধীকে যেন ধরা হয়।’

পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের মধ্যে দু’জনের নাম ঈশ্বর দাস। বাকিদের নাম মহেন্দ্র চন্দ্র ও গোবিন্দ দাস। চিলখানার দাসপাড়ার বাসিন্দা চারজনই এলাকায় সক্রিয় বিজেপি কর্মী হিসাবে পরিচিত। এদের শনিবার রাতে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। রবিবার সকালে তাদের তুফানগঞ্জ আদালতে তোলা হলে সকলকেই ১৪ দিনের জেল হেফাজত দিয়েছেন বিচারক।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের দু-দিন পর ৪ মে সকালে চিলাখানার ভুট্টা জমির মধ্যে থেকে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী শাহিনুর রহমানের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, শাহিনুর রহমানকে হাত, পা বেঁধে মাথার পিছনে ধারালো অস্ত্রের কোপ মেরে খুন করা হয়। বিজেপি কর্মীরাই তাঁকে খুন করেছে বলে অভিযোগ করেন শাহিনুর রহমানের পরিবার। প্রথমে পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও পরে আদালতের নির্দেশে ঘটনার তদন্তভার নেয় সিবিআই।

শাহিনুর রহমানের খুনের তদন্তে এলাকায় গিয়ে তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করার পর শনিবার রাতে চার বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করে সিবিআই। কাকা-ভাইপো ঈশ্বর দাস, গোবিন্দ দাস সহ মহেন্দ্র চন্দ্র ও আরেক ঈশ্বর দাসকে তাদের বাড়ি থেকেই গ্রেফতার করেন গোয়েন্দা আধিকারিকরা। এরপর এদিন সকালে ধৃতদের তুফানগঞ্জ আদালতে পেশ করে পুলিশ হেফাজতে দেওয়ার আবেদন জানায় সিবিআই। কিন্তু আবেদনপত্রের সঙ্গে সিডি জমা দিতে না পারায় CBI-এর আবেদন খারিজ হয়ে যায়। ধৃত চারজনকে ১৪ দিনের জেল হেফাজত দেওয়া হয়।

চার মাস দেরি হলেও স্বামী খুনে অভিযুক্তরা গ্রেফতার হওয়ায় খুশি শাহিনুর রহমানের স্ত্রী মৌমিতা পারভিন। তৃণমূল কর্মী বলেই স্বামীকে নৃশংসভাবে খুন হতে হয় অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আমরা গোটা পরিবার তৃণমূল কংগ্রেস করি। বছর পাঁচেক ধরে স্বামী সক্রিয়ভাবে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তাঁকে খুনের পিছনে এলাকার বিজেপি কর্মীরাই যুক্ত।’ অভিযুক্তদের কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

যদিও ধৃত গোবিন্দ দাসের কাকিমা শম্পা দাসের দাবি, তাঁর দেওর ও ভাশুরপো নির্দোষ। তাঁরা আগে বিজেপি করতেন। তবে তাঁরা কোনও খুনের ঘটনায় জড়িত নয়। ঘটনার দিন বাড়িতে পারিবারিক অনুষ্ঠানে তাঁরা ব্যস্ত ছিলেন বলে দাবি পরিবারের।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*