গোটা রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই পঞ্চায়েত ভোট করার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট।যদিও পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে, তারই বিশেষ অংশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে বৃহস্পতিবার আদালতের দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন।হাইকোর্টের রায়ে উল্লেখ করা হয়েছিল, নির্বাচন কমিশন যে কয়েকটি জেলাকে স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করেছে সেখানে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। এই অংশ নিয়েই আপত্তি জানিয়েছে কমিশন ও রাজ্য। তাদের দাবি, নির্বাচন কমিশন এখনও পরিস্থিতির মূল্যায়ন করেনি।
এদিন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চের প্রশ্ন, রাজ্য নির্বাচন কমিশন কেন সময় নষ্ট করছে। হাইকোর্টের নির্দেশ থাকার পরেও কমিশন কেন দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে না৷প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুনই পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য রাজ্যের একাধিক জেলায় অবিলম্বে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট৷ সে দিন পঞ্চায়েত মামলার রায় দিতে গিয়ে এই নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ৷
ইতিমধ্যে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী গোটা রাজ্যে মোতায়েন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ কমিশনের আবেদন মতো বিনা খরচে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠাতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে। রাজ্য সরকার কোনও খরচ দেবে না। গত বিধানসভা নির্বাচনেও কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে আট দফায় ভোট হয়েছিল। কিন্তু বিরোধীরা পায়ের তলায় জমি খুঁজে পায়নি।এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, বিরোধীরা ইচ্ছাকৃতভাবে মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে যেভাবে পরিস্থিতি অশান্ত করে তুলল এবং তারপর এই কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট। এই বিষয়টা কি ঠিক হল? প্রশ্ন তুললেন কুণাল। যদিও তাঁর সাফ কথা, তৃণমূল কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোটকে ভয় পায় না। ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ।তৃণমূল মানুষের ভোটে জয়ী হবে।
আদালতকে রাজ্য জানায়, আমরা পুলিশের ব্যবস্থা করছি। সমস্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, বিহার, পঞ্জাব এবং তামিলনাড়ুর কাছে পুলিশ চাওয়া হয়েছে। তামিলনাড়ুর মুখ্যসচিব আশ্বাস দিয়েছেন। বাইরের রাজ্য থেকে পুলিশ আসছে।এই পরিস্থিতির মধ্যে হাইকোর্টের এই রায়। এই বিষয়ে রাজ্যের তরফে আইনজীবী তথা তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মহামান্য বিচারপতি, আপনি টিভি চ্যানেলে প্রভাবিত হয়ে কোনও রায় দেবেন না।এমনটা যেন না হয়, যে বিরোধী দলগুলি আপনার রায়কে হাতিয়ার করে রাজনৈতিক প্রচার চালাতে পারে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাজ্যের পুনর্বিবেচনার আর্জি নিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, গতকালও কোথাও কোথাও অশান্তি হয়েছে। লাঠিচার্জ হয়েছে। এটা ঠিক না। কমিশনের ওপর মানুষ আস্থা হারাবে। আমরা নির্দেশটা বাস্তবায়নের জন্য দিয়েছি।যদি হাইকোর্টের রায় কমিশনের অপছন্দ হয়, সেক্ষেত্রে তারা উচ্চ আদালতে যেতে পারেন, সে কথাও উল্লেখ করেছেন প্রধান বিচারপতি। প্রয়োজনে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
Be the first to comment