রোজদিন ডেস্ক :- ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রি করে দিতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার! তাও আবার সরকারের বন্ধু শিল্পপতিদের কাছে। এমনই অশনি সঙ্কেত দেখছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম৷
সোমবার মৌলানা আবুল কালাম আজাদের জন্ম বার্ষিকীতে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যের পুরমন্ত্রী বলেন, ‘পয়সা নেই বলে কেন্দ্রীয় সরকার রেল ও এয়ার ইন্ডিয়ার মতো ওয়াকফ সম্পত্তিও বেচে দিতে চাইছে।’ এদিন তিনি আশঙ্কা করেন, নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ কোনও শিল্পপতি কিংবা ব্যবসায়ীর নজরে হয়তো কোনও ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে। সেই সম্পত্তি তাঁদের কাছেই বিক্রি করতে চাইছে মোদী সরকার। তাই তড়িঘড়ি পদক্ষেপ নিতে চাইছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করে এদিন ফিরহাদ বলেন, ‘মোদী জমানায় ভারতবর্ষের সাধারণ মানুষের কোনও উন্নতি সাধন না হলেও, কেন্দ্র-ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের উন্নতি হয়েছে। তাঁদের মধ্যেই কারো নজরে হয়তো কোনও বিশেষ ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে।’
উল্লেখ্য, ওয়াকফ নিয়ে যুগ্ম সংসদীয় কমিটি ৬ দিনে পাঁচ রাজ্য সফর বয়কট করে তৃণমূল সহ সমস্ত বিরোধী সাংসদরা। এ নিয়ে আগেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে বিরোধীরা৷ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি এক সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছেন, “জেপিসির চেয়ারম্যান দেশের স্বার্থে কাজ করছেন না। বিজেপির এজেন্ডা মেনে অগণতান্ত্রিকভাবে কাজ করছেন তিনি৷ বিরোধীদের কোনও কথা শোনা হচ্ছে না। যা মনে আসছে, তাই করছেন তিনি৷ তাই বাধ্য হয়ে এই সফর বয়কটের ডাক৷”
আর এই ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে আজ ফিরহাদের এই বিস্ফোরক দাবি রাজ্য রাজনীতিতে যথেষ্ট আলোরন জাগিয়েছে। এদি কলকাতার মেয়র এও বলেন, “ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে এত লাফাচ্ছে। মোদির বন্ধুর হয়তো মুম্বই বা কোনও প্রাইম জায়গায় জমিতে চোখ পড়েছে। তাই এখন যে করেই হোক, ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রি করতে হবে৷ আর তাদের কাছেই বিক্রি করবে, যারা বন্ধু ব্যবসায়ী আছে৷ যে ব্যবসায়ীদের প্রগ্রেস হয়েছে৷ দেশের মানুষের তো প্রগ্রেস হয়নি৷ কেন্দ্রের পয়সা নেই। তাই সব বিক্রি করতে চায়৷ রেল, বিমান বিক্রি করেছে, এবার ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রি করবে৷”
উল্লেখ, ২৫ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া বিধানসভা অধিবেশনে ওয়াকফ ইস্যু উঠতে পারে৷ অধিবেশনে শাসকদলের তরফে আলোচনার জন্য প্রস্তাব পেশ হতে পারে বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, “আসন্ন বিধানসভার অধিবেশনে এই নিয়ে আলোচনা হতে পারে৷ ব্যক্তিগতভাবে আমি ওয়াকফ বিলটি দেখেছি। এ নিয়ে সদস্যরা যা বলবেন, তা আলোচনার সময় জানা যাবে৷ তবে, ব্যক্তিগতভাবে আমি বিলটিকে সমর্থন করতে পারছি না৷”
উল্লেখ্য, সোমবার ভুবনেশ্বরে ওয়াকফ নিয়ে একটি বৈঠক ছিল৷ তবে, উপনির্বাচনের কারণ দেখিয়ে সেই বৈঠক পিছিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস-সহ ইন্ডিয়া জোট৷ কিন্তু, জয়েন্ট পার্লামেন্টারি কমিটির তরফে সেই অনুরোধ না-মানায়, বৈঠক বয়কট করেন তৃণমূলের সাংসদরা৷
Be the first to comment