ভোটে জিততে প্রতিশ্রুতি নতুন নয়। অন্তত এ দেশে সেটাই দস্তুর। বৈতরণী পার হওয়ার পর সে সব কথা মনে না রাখলেও চলে। কিন্তু তাই বলে একেবারে সরকারি প্যাডে সই করে, সিল মেরে প্রতিশ্রুতি? আর তারপর অভ্যেস মতোই তা ঝেড়ে ফেলে দিয়ে নিজেই বিতর্কে জড়ালেন মালদা জেলা পরিষদের সহ সভাপতি চন্দনা সরকার।
তখন তিনি মালদা জেলা পরিষদের কৃষি সেচ ও সমবায় স্থায়ী সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ। কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকের দিনুটোলা গ্রামের মানুষদের অভিযোগ, জেলা পরিষদে তাঁকে জিতিয়ে আনলেই গ্রামে কমিউনিটি সেন্টার তৈরির জন্য তিন লক্ষ টাকা দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন চন্দনা সরকার। মঞ্চে দাঁড়িয়ে লিখিত প্রতিশ্রুতি নয়, একেবারে সরকারি কাজে ব্যবহার হওয়া প্যাডে সই করে লিখিত প্রতিশ্রুতি। কিন্তু চন্দনা কথা না রাখায় সেই সই করা প্রতিশ্রুতি পত্র নিয়ে মঙ্গলবার জেলা পরিষদে এসে ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও অভিযোগ জানাতে চান দিনু টোলার বাসিন্দারা।
সরকারি কাজে ব্যবহৃত হওয়া মালদা জেলা পরিষদের কৃষি সেচ ও সমবায় স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ চন্দনা সরকারের প্যাডে লেখা “দিনুটোলা ওয়ার্ড ও গ্রামের লোকের সুবিদার্থে কমিউনিটি হলের জন্য তিন লক্ষ টাকা জেলা পরিষদের ফান্ড থেকে দিলাম।” ভোটে জেতার জন্য এমন লিখিত প্রতিশ্রুতি দেখে চক্ষু চড়কগাছ জেলা পরিষদের সদস্য থেকে শুরু করে জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের। কারণ রাজ্য সরকার বা জেলা পরিষদ কারও তরফেই এমন বরাদ্দের কথা কখনও ঘোষণা করা হয়নি। টাকা বরাদ্দ হলেও সেই টাকা উন্নয়নমূলক খাতে খরচ করতে হলে নির্দিষ্ট সরকারি বিধি ও পদ্ধতি রয়েছে। সেখানে শুধু ভোট পেতে এমন অদ্ভুত কাণ্ডটা তিনি করলেন কি করে ?
যদিও চন্দনাদেবী দাবি করেছেন, এটা নাকি একেবারেই ভুলবশত করে ফেলা। তিনি বলেন, “ভোটারদের বিশ্বাস করাতেই এমন প্রতিশ্রুতি এ ভাবে লিখে দিতে বাধ্য হয়েছিলাম।”
বিষয়টি নিয়ে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল। তবে সেই তদন্তের আশ্বাসে ক্ষান্ত থাকতে চাইছেন না দিনুটোলা গ্রামের মানুষ। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যেতে চান।
Be the first to comment