তিনবছর পর চন্দননগরে পুরভোট, প্রকাশিত হলো প্রার্থী তালিকা

Spread the love

পূর্ণ সময় টিকে থাকতে পারলে চন্দননগর পুরনিগমের মেয়াদ শেষ হতো ২০২০ সালে কিন্তু তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৮ সালের অগাস্ট মাসেই খারিজ হয়ে যায় পুরবোর্ড ৷ প্রাক্তন মেয়র রাম চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে দলেরই অধিকাংশ কাউন্সিলর বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন ৷ তৃণমূলের ঘরোয়া কোন্দল পৌঁছয় থানা পর্যন্ত ৷ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব অনেক চেষ্টা করেও চন্দননগরের কোন্দল সামাল দিতে পারেনি ৷ যার নিট ফল, সময়ের আগে ভেঙে যায় পুরবোর্ড ৷ সেই চন্দননগর পুরনিগমে এবার নতুন পুরবোর্ড গঠন হওয়ার অপেক্ষায় ৷

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হল তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ৷ গুরুত্বপূর্ণ মুখদের মধ্যে টিকিট পেয়েছেন মোহিত নন্দী (২ নং ওয়ার্ড), অনিমেষ বন্দ্যোপাধ্যায় (৪ নং ওয়ার্ড), পার্থসারথি দত্ত (৭ নং ওয়ার্ড), অজয় ঘোষ (১০ নং ওয়ার্ড), শুভজিৎ সাউ (১৩ নং ওয়ার্ড), শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় (২১ নং ওয়ার্ড), প্রসেনজিৎ মুখোপাধ্যায় (২৩ নং ওয়ার্ড), রাম চক্রবর্তী (৩০ নং ওয়ার্ড) এবং মুন্না সাউ (৩১ নং ওয়ার্ড) ৷ মহিলাদের মধ্যে অনেক নতুন মুখ এবার প্রার্থী হয়েছেন ৷ এদিকে প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরই পুরভোট ঘিরে সরগরম হয়ে উঠেছে চন্দননগর ৷

চন্দননগর পুরনিগমে মোট ৩৩টা ওয়ার্ড৷ ২০১৫ সালে এই ৩৩টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পায় ২৩টি ওয়ার্ড ৷ সিপিএম জয়ী হয় ৯টি আসনে৷ বিজেপির দখলে যায় ১টি আসন ৷ ২৩টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়ে তৃণমূল পুরবোর্ড গঠন করে৷ মেয়র হন রাম চক্রবর্তী ৷ কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই রাম চক্রবর্তীকে নিয়ে দলের কাউন্সিলরদের মধ্যেই ক্ষোভ বাড়তে থাকে ৷ অভিযোগ, দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণকে প্রশয় দিচ্ছেন মেয়র ৷ ক্ষোভ বাড়তে বাড়তে একটা সময় চরমে পৌঁছয় ৷

২০১৮ সালের অগস্ট মাসে শেষ পুর-পারিষদের বৈঠক হয় ৷ সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, এই বোর্ড পুর-পরিষেবা দিতে ব্যর্থ ৷ রাম চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন ডেপুটি মেয়র জয়ন্ত দাস, জয়দেব সিং, অজয় ঘোষ-সহ অন্যান্য কাউন্সিলররা ৷ তাঁরা চিঠি লিখে দলকেও জানায়, এই মেয়রের নেতৃত্বে পুর বোর্ড নাগরিক পরিষেবা দিতে ব্যর্থ ৷ এরপরই ভেঙে দেওয়া হয় চন্দননগর পুরবোর্ড ৷ বেনজিরভাবে জনগণের ভোটে নির্বাচিত চন্দননগর পুরনিগমের মেয়াদ সময়ের আগেই শেষ হয়ে যায়৷

পুর পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে তখন পুর কমিশনার স্বপন কুণ্ডুকে ছ’মাসের জন্য বোর্ড প্রশাসক করা হয়৷ ছ’মাস পর প্রশাসকমণ্ডলীতে আরও পাঁচজনকে মনোনীত করা হয় ৷ রাম চক্রবর্তীকে করা হয় চেয়ারম্যান৷ এছাড়া প্রশাসকমণ্ডলীকে রাখা হয় বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেন, মুন্না আগরওয়াল, অনিমেষ বন্দ্যোপাধ্যায় ও পীযূষ বিশ্বাসকে ৷ বাকি কাউন্সিলকদের পদ খারিজ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা নাগরিক পরিষেবা দিতে পারছিলেন না ৷ বিধানসভা নির্বাচনের পর ইন্দ্রনীল সেন বোর্ড থেকে সরে যান ৷ তখন শুভেন্দু মুখোপাধ্যায়কে সেই জায়গায় নিয়ে আসা হয় ৷ প্রায় তিন বছর ধরে নির্বাচিত নয় এমন কয়েকজনকে নিয়ে কর্পোরেশন চলছে ৷

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*