বিক্ষোভের জেরে এবার বন্ধ হল বিশ্ববিদ্যালয়। ৬০ জন ছাত্রীর স্নানের ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়াকে কেন্দ্র করেই বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে পঞ্জাবের চণ্ডীগঢ় বিশ্ববিদ্যালয়। ইতিমধ্যেই পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী সহ মোট তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। এরপরও ছাত্র-ছাত্রীরা বিক্ষোভ জারি রাখাতেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আগামী শনিবার অবধি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটি ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি মেয়েদের হস্টেলের ওয়ার্ডেন রাজভিন্দর কৌরকেও সাসপেন্ড করা হয়েছে ছাত্রীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করার জন্য।
শনিবার রাত থেকেই বিক্ষোভে উত্তাল চণ্ডীগঢ় বিশ্ববিদ্যালয়। অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের হস্টেলের ৬০ জন আবাসিকের ভিডিয়ো ভাইরাল করে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার পরই কমপক্ষে আটজন পড়ুয়া আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলেও দাবি পড়ুয়াদের। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, গার্লস হস্টেলে দল বেঁধে স্নান করছিলেন ছাত্রীরা। সেই সময়ই এক ছাত্রী গোপনে স্নানের ভিডিয়ো রেকর্ড করে নেয় এবং পরে তা সিমলার বাসিন্দা এক বন্ধুর কাছে পাঠিয়ে দেয়। পরে ওই তরুণই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেয় ভিডিয়োগুলি। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় তোলপাড় হতেই তদন্তে নামে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত ছাত্রী সহ তিনজনকে।
এদিন সকালেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, হস্টেলের দুই ওয়ার্ডেনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। একটি ভাইরাল ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, ওই ওয়ার্ডেন অভিযুক্ত ছাত্রীকে প্রশ্ন করছেন যে কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের ছেলেদের কাছে ওই ভিডিয়োগুলি পাঠিয়েছে। বাকি ছাত্রীরা ওই ভাইরাল ভিডিয়োকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ শুরু করলে, তিনি তাদেরও ধমক দিয়ে চুপ করানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। ছাত্রীরা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ছাত্রীর কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ওয়ার্ডেন জানলেও তিনি পুলিশে অভিযোগ জানাননি।
পুলিশের তরফে গতকাল জানানো হয়েছিল যে, এখনও অবধি একটি ভাইরাল ভিডিয়োই পাওয়া গিয়েছে, যেটি অভিযুক্ত ছাত্রীর স্নানের ভিডিয়ো। গতকালই ওই ছাত্রীর ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয় ও ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সূত্রের খবর, ওই ছাত্রীর ফোন থেকে চারটি ভিডিয়ো পাওয়া গিয়েছে, যেগুলি অন্যান্য ছাত্রীদের। গোপনে ওই ভিডিয়োগুলি রেকর্ড করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ছাত্রী তাঁর প্রেমিককে ওই ভিডিয়োগুলি পাঠিয়েছিল, যা ওই যুবক সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে এবং তা নিমেষেই ভাইরাল হয়ে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের তরফে জানানো হয়েছে যে, ওই ভিডিয়োগুলি ভাইরাল হওয়ার পরই আটজন ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এখনও অবধি সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও ভিডিয়োও পাওয়া যায়নি বলেই দাবি করা হচ্ছে।
শনিবার অবধি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা ও মেয়েদের হস্টেলের ওয়ার্ডেনদের সাসপেন্ড করার পাশাপাশি বাকি হস্টেলগুলির ওয়ার্ডেনদেরও বদলি করা হয়েছে। হস্টেলে প্রবেশ ও বেরোনোর সময়ও বদলে দেওয়া হয়েছে।
Be the first to comment