প্রেমিকা হিন্দু। তাঁকে বিয়ে করতে গেলে পেরোতে হবে ধর্ম-সমাজ-সংস্কারের বাধা। তাই নিজের ধর্ম বদলে নেওয়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মুসলিম যুবক। ধর্ম বদলে নিয়েছিলেন হিন্দু নামও। কিন্তু তাতেও হয়নি সুরাহা। প্রেমিকার পরিবারের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্মান্তরিত মুসলিম যুবকের সঙ্গে হিন্দু মেয়ের বিবাহের বৈধতা দিতে নারাজ ছত্তীসগঢ় হাইকোর্ট। নিরুপায় যুবক তাই দ্বারস্থ হয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের।
ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরের বাসিন্দা বছর তেত্রিশের ইব্রাহিম সিদ্দিকির আর্জিতে ছত্তীসগঢ় হাইকোর্টকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র এবং বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চ। তাঁর স্ত্রীকে স্বামীর কাছে ফিরে আসার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
রক্ষণশীল জৈন পরিবারের মেয়ে বছর তেইশের অঞ্জলি জৈনের সঙ্গে তিন বছরের সম্পর্ক ইব্রাহিমের। পেশায় ইব্রাহিম একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির এক্সিকিউটিভ পদে রয়েছেন। অঞ্জলিকে বিয়ে করার জন্য গত ২৩ ফেব্রুয়ারি নিজের ধর্ম বদলে ইব্রাহিম হন আরিয়ান আর্য। প্রেমিকের ডাকে সাড়া দিয়ে বাড়িতে কিছু না জনিয়েই ২৫ ফেব্রুয়ারি রায়পুরের একটি জৈন মন্দিরে আরিয়ান ওরফে ইব্রাহিমকে বিয়ে করেন অঞ্জলি। তারপর ফিরে আসেন বাড়িতে।
বিষয়টি পরিবারে জানাজানি হলে অশান্তি শুরু করেন অঞ্জলির বাবা, মা। বিয়ে ভেঙে দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হতে থাকে অঞ্জলিকে। পরিবারের চাপে ৩০ জুন বাড়ি থেকে পালান অঞ্জলি। কিন্তু, স্বামীর সঙ্গে দেখা হওয়ার আগেই তাঁকে ধরে ফেলে পুলিশ এবং একটি হোমে নিয়ে গিয়ে রাখা হয়।
স্ত্রীকে ফিরে পেতে ছত্তীসগঢ় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ইব্রাহিম। কিন্তু, তাঁর আর্জি খারিজ হয়ে যায়। এই বিয়ের আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে হাইকোর্ট। আদালত নির্দেশ দেয় হয় অঞ্জলি তাঁর বাবা, মায়ের কাছে ফিরে যাবে, না হলে কোনও হোস্টেলে থাকবে। সেখানে গিয়ে তাঁর পরিবার তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারবে সপ্তাহে তিন দিন।
হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ইব্রাহিম। তাঁর দাবি, তাঁরা নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করেছেন। সুতরাং, প্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রীর উপর কোনও চাপ না দিয়ে তাঁকে তাঁর মত অনুযায়ী কাজ করতে দেওয়া হোক। আদালতে হাজির হওয়ার জন্য অঞ্জলিকে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
Be the first to comment