
রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:- চৈত্র সংক্রান্তিতে কালীঘাটের স্কাইওয়াকের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই স্কাইওয়াক তৈরির জন্য হকারদের রুজি রোজগার বন্ধ হয়ে যেতে পারত বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল হকারদের একাংশের মনে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেই সংকট কেটে যায়। হকারদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়। একবছরের জন্য হাজরা পার্কে হকার্স কর্নার বানিয়ে দেওয়া হয়।
সোমবার কালীঘাটের স্কাইওয়াকের পাশাপাশি হকার্স কর্নারের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে মমতা জানান, দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াকের বৈঠকের সময়ই কালীঘাটে স্কাইওয়াক তৈরির কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু দক্ষিণেশ্বরে বেশ কিছুটা জায়গা থাকলেও কালীঘাট বড্ড ঘিঞ্জি। ফলে স্কাইওয়াক তৈরির জন্য জায়গা বের করা কঠিন কাজ ছিল। আর কালীঘাটের উন্নয়নের স্বার্থে যখন এই স্কাইওয়াকের পরিকল্পনা করছেন মুখ্যমন্ত্রী সেইসময় হকারদের একাংশের মনে আশঙ্কা তৈরি হয় যে তাঁদের পেটে টান পড়তে পারে। সংকট কাটাতে হাল ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। কাজের সঙ্গে যুক্ত সকলকে মাথা খাটিয়ে উপায় বের করার পরামর্শ দেন। তারপরই হকারদের বিকল্প ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “তারা যখন ভাবতে পারছে না এই হকারদের কোথায় নিয়ে গিয়ে বসাব? তাহলে কি তাঁদের রুজিরোজগার বন্ধ হয়ে যাবে? আমি বললাম না। বুদ্ধি খরচ করো। এক বছরের ব্যাপার তো। স্কাইওয়াক বানাতে যতদিন সময় লাগে ওদের হাজরা পার্কে ব্যবস্থা করে দাও। ওখানে টেম্পোরারি বসুক। যাতে ওদের বিক্রিবাটা বন্ধ না হয়।” সেই সময় হাজরা পার্কে হকারদের সরিয়ে দেওয়া হয়। আজ হকারদের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হকার্স কর্নারও উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন স্কাইওয়াক চত্বরেই নতুন বিল্ডিংয়ে ১৭৬টি দোকান রয়েছে।
প্রসঙ্গত, আগেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে ছিলেন পয়লা বৈশাখের আগে চৈত্র সংক্রান্তিতে উদ্বোধন করা হবে কালীঘাট স্কাইওয়াকের। সেই কথা মতোই সোমবার পয়লা বৈশাখের ঠিক আগের দিন সেই স্কাইওয়াকের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু স্কাইওয়াক নয়, পাশাপাশি মোট ৩টি প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন তিনি। স্কাইওয়াক তৈরির পাশাপাশি কালীঘাট মন্দিরও নতুন করে সাজানো হয়েছে। তার উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি যে হকারদের হাজরা পার্কে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তাদের জন্য নতুন হকার্স কর্নারেরও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই স্কাইওয়াক তৈরির খরচ ৯৯ শতাংশই দিয়েছে রাজ্য সরকার। বাকি কালীঘাট মন্দিরের একটি চূড়ার অংশ সোনা দিয়ে বাঁধানো হয়েছে, সেটি করেছে রিলায়্যান্স।
উল্লেখ্য, কালীঘাটের এই প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার বরাদ্দ করে ১২৫ কোটি টাকা। প্রায় ৪৫০ মিটার লম্বা এই স্কাইওয়াক এসপি মুখার্জি রোড থেকে কালী মন্দির রোড পর্যন্ত তৈরি করা হয়েছে। নকশা অনুযায়ী, স্কাইওয়াকে ওঠার জন্য রয়েছে চলমান সিঁড়ি। দেখতে খানিকটা দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াকের মতোই। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, স্কাইওয়াকটির ফলে কালীঘাটের ওই রাস্তায় যানজট কমবে। হাঁটাচলা করা যাবে ঠিকমতো এবং দুর্ঘটনাও কম হবে।
Be the first to comment