পেশাদার ফুটবলাররা বোধহয় এমনই হন। জার্সি বদল হলেও তাঁদের মনোভাবের বদল হয় না কখনই। আর ফুটবলারটি যদি হন রোনাল্ডো, তাহলে পেশাদারিত্বই হয় শেষ কথা। তা না হলে যেখানে তাঁর বয়সী তারকারা ক্লাব ফুটবলে নিজের জায়গা বাঁচাতে মরিয়া, সেখানে ৩৩ বছরের রোনাল্ডো বিশ্বের সবথেকে ধনী ক্লাবের সঙ্গ ছাড়লেন। কারণ, তিনি ‘উচ্চাভিলাষী’ এবং জীবনে সবসময়ই ‘চ্যালেঞ্জ নিয়েই বাঁচতে চান’। তুরিনে পা রেখেই ১০ কোটি ইউরোর রোনাল্ডো সাফ জানিয়ে দিলেন, তিনি ভেবেচিন্তেই জুভেন্তাসে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
যে ক্লাব বিগত দু’দশকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ছায়াও মারাতে পারেনি, সেই ক্লাবে কেন আসতে গেলেন সিআর সেভেন? রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলের (৪৫১) রেকর্ড, তিন তিনটি চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়, পাঁচ পাঁচটা ব্যালন ডি’অর পাওয়া, এরপরও কেন রিয়েল ছাড়লেন রোনাল্ডো? এতদিন নির্বিকার থাকা পর্তুগিজ তারকা অবশেষে মুখ খুললেন। প্রথমে যেটা বললেন, তা হুবুহু তাঁর প্রাক্তন কোচের মতোই শোনালো! নতুন চ্যালেঞ্জ নিতেই রিয়াল ছেড়েছিলেন জিনেদিনে জিদান। নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে ক্লাব ছাড়লেন রোনাল্ডোও।
জুভেন্তাসে যোগ দিয়ে সিআর সেভেন জানিয়ে দিলেন, “আমি উচ্চাভিলাষী, চ্যালেঞ্জ নিতে ভালবাসি। সবসময় বর্তমান নিয়ে ভাবতে পছন্দ করি। আমি এখনও আগের মতোই রয়েছি। ম্যাঞ্চেস্টার থেকে রিয়াল, এখন জুভেন্তাস, সবটাই আমার কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ”। এখানেই শেষ নয়। এরপরই রোনাল্ডো পরিষ্কার বুঝিয়ে দেন কেন ইতালির এই ক্লাবেই এলেন তিনি। তাঁর বয়সে (৩৩) এসে যেখানে ফুটবল তারকারা পেশাদার প্রতিযোগিতা থেকে তুলনামূলক দূরে সরতে থাকেন, কাতার বা চিনের ক্লাবগুলোতে যোগ দেন, সেখানে জুভেন্তাস তাঁর খিদে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলেই তিনি ইতালিতে এসেছেন।
ইতালির এই বর্ষীয়ান ক্লাবকে দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়নস লিগে জেতাতে চান তিনি। একই সঙ্গে জিততে চান সিরিজ ‘এ’ টাইটেলস-ও। জুভেন্তাস শেষ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জেতে ১৯৯৬ সালে। এরপর বহু তারকাই এই ক্লাবের সঙ্গে নিজেদের সম্পর্ক জুড়লেও ইউরোপের সেরা ট্রফি জয় করতে পারেনি জুভেন্তাস। সিআর সেভেন মনে করছেন তিনি আসাতেই ভাগ্য ফিরবে ইতালির। নতুন ক্লাবের হাতে ইউরোপ সেরা ট্রফি তুলে দিতে পারবেন, এতটাই আত্মবিশ্বাসী ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো।
Be the first to comment