অনুপ বৈরাগী:
“গেরামের মানুষ ! কি আর করি দিদি
কপাল কপাল!
সুখের লাগি শুকতলা চিবুই আর চাপাকলের পানি খাই
গেল বছর খরা হল
হা পানি হা পানি
করতি করতি
হাঁপানি ধরি গ্যালো
শুনচি নাকি জাপানিরা
কিসব তেল বের করেচে
ফোঁস তেল নাম দেচে
তা হ দিদি
নাকের ফোঁসফোঁসানি কমবে গো
ও তেল মাকলি?”
এটুকু শুনে বুর্জোয়া টেবিলে
হাসির রোল উঠতেই পারে
ফেনিল হাসির ফাঁক গলে
যে টুকু কনা ডাস্টবিনে জমা হয়
তার থেকে বাটোয়ারা ভাগ
নরম ঠোঙায় অথবা ফিনফিনে পলি প্যাকে
চলে যাবে ফুটপাতে ব্রিজের তলায়
খোরাকি ঢেকুরে উগরে দেবে
একপেট তৃপ্তির শব্দসূচক
“আহা ! যদি গেরামে থাকতে পারতুম
হালের গোরু দুটোকে যদি রাকতে পারতুম
যদি ছোঁড়াডারে দুবেলা দানা দিতে পারতুম”
ক্লান্তির চোখ ঢুলে আসে
ল্যাম্পপোস্ট পাহারা দেয় ছেঁড়া চটি
অথবা কিংবা যদি’র
অযাচিত ভিড়ে গুজরানের আচ্ছন্ন রাত
এলোমেলো শ্বাসে প্রহর গোনে
আবারও নরম আলোর কুঁড়িচুমু খেয়ে
ডানা মেলে রঙিলা পাখা
বুম হাতে আরো একদল এসে যায়
হাত নেড়ে বলে যায়
যে কটা কথা বলে দিলাম
ওগুলোই বলে যেও !
সরকার ভাববে সমাজ ভাববে
সব পাবে
“সঅঅঅঅঅব পাবো দিদি!
ঘর দোর গোয়াল গোরু ধানিজমি
সব পাবো দিদি ?”
ঘোলাটে চোখ স্বচ্ছ হয়ে আসে
আকর্ণ হাসির রেশ..
আরে আরে ! ও হবেখন
যেগুলো বলেছি মনে আছে তো
এই যে মশাই ! শুনছো
(বলাবাহুল্য! বেমালুম ভুলে গেছে সব
পাখিপড়া সংলাপ । ভাসা ভাসা চোখে
দিবাস্বপ্নের সাম্পানে বেলহরী ঢেউ )
“হ দিদি
সব মনে আছে
দোচালা ঘর হালের গোরু পোলাডা
ছড়ানো উঠোন দুমুঠো নুন ভাত …..”
Be the first to comment