স্বপ্নের বিশ্ববাংলাকে বিশ্বের দরবারে নিয়ে যাবইঃ মুখ্যমন্ত্রী

Spread the love

পিয়ালি আচার্যঃ

মঙ্গলবার বিধানসভায় পাশ হয়েছে বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয় বিল। বিরোধীশূন্য বিধানসভাতেই পাশ হয়েছে এই বিল। বিধানসভায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ হওয়ার সময় বিরোধীরা না থাকায় ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার বিধানসভায় নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয় বিলে বক্তব্য পেশের সময়ও বিধানসভার কক্ষ ছিল বিরোধী শূন্য। সেইসময় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই অনেকে এসব করেন। কিন্তু আমি বাংলাকে ভালোবাসি। এমাটিতে জন্মে আমি গর্বিত। আর বিশ্ববাংলা নামের জন্যও আমি গর্বিত। আমাদের সব ব্র্যান্ডে বিশ্ববাংলা নাম থাকবে। পাশাপাশি বলেন, কংগ্রেস দিল্লিতে সংসদে আমাদের সহযোগিতা ছাড়া এক পাও চলতে পারেনা, আর এখানে কাগজে ছবি তোলার জন্য মিথ্যা কুৎসা করে। ৫ বছর ধরে দেখছি, কোনো না কোনো ইস্যু দেখিয়ে বয়কট করে। আসলে নিজেদের আদর্শ নিজেদের রাজনীতিকেই ওরা বয়কট করছে। এরকম হলে কেন্দ্রে কংগ্রেসকে বিভিন্ন ইস্যুতে সহযোগিতা থেকে তাঁরা পিছু হঠে আসবেন স্পষ্ট জানিয়ে দেন মমতা ব্যানার্জি। বিরোধীদের উদ্দেশে তিনি বলেন রাজ্য বিধানসভায় তাঁদের সংখ্যা ও শক্তি কম, কিন্তু তাও তিনি একজন থাকলেও তাঁদের সম্মান করেন। তিনি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বা সিপিএমের মতো ২৩৫, ৩০ এর ঔদ্ধত্য দেখান না । কিন্তু তাই বলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে কুৎসা করবেন? বলেন আমাদের সহ্যশক্তিকে দুর্বলতা ভাববেন না।

এরপর বিশ্ববাংলা প্রসঙ্গে আবার ফিরে আসেন তিনি। বলেন বোলপুরে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় আছে। অত ভালো হয়তো এখনই আমরা পারবনা। কিন্তু যাঁরা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাননা তাঁরা তো এখানে পড়তে পারবেন। অনেক ছাত্রছাত্রী এখানে পড়াশোনার সুযোগ পাবেন।

এরপর বিশ্ববাংলা নিয়ে অযথা বিতর্কে বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাংলা নিয়ে কী সমস্যা? নাম নিয়ে, লোগো নিয়ে আপত্তি? ব্র্যান্ডটা বাংলার সম্মান। এটা নিয়ে প্রশ্ন করা প্রতিহিংসা ছাড়া আর কিছুই নয়। এটা আমার স্বপ্ন, একে আমি সৃষ্টি করেছি। ৩ জন সাংবাদিক সাক্ষী। গাড়িতে যেতে যেতে এই নাম ও লোগো আমি তৈরী করেছি। এই নাম ও লোগোকে যাঁরা অসম্মান করছেন, বাংলার মানুষ তাঁদের ক্ষমা করবেন না। ১৬ই সেপ্টেম্বর ২০১৩ এটি প্রথম সিনার্জি এমএসএমই কলকাতাতে লঞ্চ করে। কলকাতা এয়ারপোর্টে এর প্রথম শোরুম হয় ২৫শে ফেব্রুয়ারি ২০১৪। ২০১৪ সালেরই ২৩শে মার্চ রাজ্য সরকারকে তাঁর স্বপ্নের এই প্রকল্প প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিধানসভায় একথা জানিয়ে তিনি বলেন আমি পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছি। এরজন্য চুক্তিও হয়েছে, কিন্তু আমি এর জন্য কোনওরকম টাকা বা রয়্যালটি চাইনি বা নিইনি। সরকার যতদিন চাইবে তার কাছে থাকবে, আর যখন কন্টিনিউ করবেনা তখন এর স্বত্ব আমার কাছেই ফিরে আসবে।

আবারও মুখ্যমন্ত্রী বলেন এটা আমার স্বপ্ন আর স্বপ্ন কখনও বিক্রি হয়না। এর ট্রেডমার্কও আমাদের নেওয়া আছে। ২০১৪ এর মার্চ মাসে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট এক্সপোর্ট প্রোমোশন সোসাইটি (এমএসএমই এবং টেক্সটাইল ডিপার্টমেন্ট) এটির রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়া শুরু করে এবং ২০১৪ এর ১৯শে জুন থেকে এটা রাজ্য সরকারের সম্পত্তি। গভর্ণমেন্ট অব ইন্ডিয়ার ওয়েবসাইটেও এটি স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন আমি এতো কথা বলতাম না। কিন্তু বাংলাদেশ পর্যন্ত এই বিশ্ববাংলাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। কথায় আছে ‘গেঁয়ো যোগী ভিগ পায়না’। ঢাকায় ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারী হতে চলা আন্তর্জাতিক বাংলা সাহিত্য সম্মেলনে বিশ্ববাংলা বিশেষ প্রকল্প হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, এ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিশেষ অতিথি হিসাবেও আমন্ত্রনও করা হয়েছে। তিনি আবারও বলেন, বিশ্ববাংলা কী, তার মর্ম কী তা বাংলাদেশের মানুষও অনুধাবন করেছেন। বিশ্বের দরবারে আমরা বিশ্ববাংলাকে নিয়ে যাবই।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*