রোজদিন ডেস্ক :-
আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। ক্রমশ স্থলভাগের সঙ্গে দূরত্ব কমাছে ঘুর্ণিঝড় দানা। ইতিমধ্যে ঝড়ের মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে রাজ্য। সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা থেকে সরানো হয়েছে কয়েক লক্ষ মানুষকে। তৈরি ব্লক প্রশাসন-সহ বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও।
পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী এদিন ছিল মন্ত্রিসভার বৈঠক। সেই বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যখনই ঝড়ের ল্যান্ডফল হোক না কেন, আমরা তৈরি। কেউ কেউ বলছে ধামরার দিকে যাবে, এদিকে ততটা প্রভাব পড়বে না। তবে এটা ঠিক তথ্য নয়।”
দুর্যোগ মোকাবিলায় খামতি যেন না থাকে, একথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে দামি মানুষের জীবন। রাতভর নবান্নে থেকেই সেটা পর্যবেক্ষণ করব।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য যে তৈরি তা স্পষ্ট করে মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, “যখনই ঝড়ের ল্যান্ডফল হোক না কেন, আমরা তৈরি। কেউ কেউ বলছে ওড়িশার ধামরার দিকে যাবে, এদিকে ততটা প্রভাব পড়বে না। তবে এটা ঠিক তথ্য নয়।”
রাজ্যবাসীকে সতর্ক করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগের মোকাবিলায় প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা জেলায় জেলায় রয়েছেন। ২৪ ঘণ্টার জন্য নবান্নে হেল্পলাইন নম্বর (০৩৩) ২২১৪৩৫২৬ চালু করা হয়েছে। যেকোনও ধরনের সমস্যায় যে কেউ ফোন করতে পারেন। তবে সিরিয়াস এই বিষয়ে কেউ যেন গুজব না ছড়ান, মনে রাখবেন এটা মানুষের জীবন বাঁচানোর লড়াই। অথচ যার যা ইচ্ছে বলে দিচ্ছে ইউটিউবে। কাজেই গুজব থেকে সতর্ক থাকুন।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় মোট ৮৫১টি ক্যাম্প খোলা হয়েছে। সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন ৮৩ হাজার ৫৮৩ জন। উপকূলবর্তী এলাকাতে নজর রাখা হচ্ছে। প্রয়োজনে আরও মানুষকে ক্যাম্পে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি মুখ্যসচিব-সহ প্রশাসনিক কর্তারাও বৃহস্পতিবার থাকবেন নবান্নে।
ইতিমধ্যে নবান্নের নির্দেশে মঙ্গলবার থেকেই সাত জেলায় রয়েছেন বিভিন্ন দফতরের সচিবেরা। দুর্যোগের মোকাবিলায় নবান্নের পাশাপাশি জেলাগুলিতেও ২৪ ঘণ্টার জন্য খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।
এই মুহূর্তে পারাদ্বীপ থেকে ১৮০ কিলোমিটার, ধামারা থেকে ২১০ কিলোমিটার ও সাগরদ্বীপ থেকে ২৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিক অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড়। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে এটি তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই ওড়িশা উপকূলে ল্যান্ডফল করবে। ওড়িশার ভিতরকণিকা ও ধামারার কাছে ল্যান্ড ফল করার প্রবল সম্ভাবনা। পুরী থেকে সাগরদ্বীপ পর্যন্ত বিস্তৃত হবে এর প্রভাব। ল্যান্ডফলের সময় ঘণ্টায় এর গতিবেগ সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার হতে পারে।
হাওয়া অফিস সূত্রের দাবি, ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়তে পারে পূর্ব মেদিনীপুরে। ল্যান্ডফলের সময় দিঘা, মন্দারমনি-সহ পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকায় ঘণ্টায় ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ১০০ থেকে ১২০ কিমি। তীব্র জলোচ্ছ্বাস দেখা যেতে পারে সমুদ্রে। ল্যান্ডফলের সময় দিঘায় জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা ১ থেকে ২ মিটার হতে পারে। একইভাবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলে দশমিক ৫ থেকে ১ মিটার পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। দানার আগমন ঘিরে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে বন্দরেও।
Be the first to comment