আশঙ্কা ছিলই। সেই মতো প্রস্তুতও ছিল পুলিশ। স্কুল খোলার দাবিতে এসএফআই ও এবিভিপির জোড়া বিক্ষোভে উত্তাল কলেজ স্ট্রিট। ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা বিক্ষোভকারীদের, পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বিক্ষোভকারীদের। দুই সংগঠনের বিক্ষোভ ঠেকাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ।
আধ ঘণ্টার দাবিতে একই ইস্যুতে একই জায়গায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল এসএফআই ও এবিভিপি-র। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে স্কুল খোলার দাবিতে বেলা ১২ নাগাদ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নামে এসএফআই। আধ ঘণ্টার ব্যবধানে একই দাবিতে একই জায়গায় পথে নামে এবিভিপি। এবিভিপির মিছিল এগোতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
তবে আগে থেকেই ব্যারিকেড দিয়ে পথ আটকে রেখেছিল পুলিশ। মিছিল এগোতেই পুলিশও সামনে এগিয়ে আসে। প্রথম ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন বিক্ষোভকারীরা। ক্যাম্পাসের দিকে এগোতে থাকেন তাঁরা। এবিভিপির রাজ্য সম্পাদক সুরঞ্জন দাসের সঙ্গে বচসা হয় পুলিশের।
কলেজ স্ট্রিটের চার দিক জুড়ে চলে বিক্ষোভ। রাস্তায় শুয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন ছাত্ররা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে বিক্ষোভের আঁচ আরও বাড়তে থাকে। দুই ছাত্র সংগঠনের দাবি একই। পানশালা খোলা হলে, খোলা হোক পাঠশালাও।
প্রেসিডেন্সির সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ চলে অবস্থান বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ। মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছে পড়ুয়ারা। তার সাম্প্রতিকতম জ্বলন্ত উদাহরণ শিলিগুড়ির মেধাবী ছাত্রের আত্মহত্যা। শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও একাংশের মত, পড়ুয়ারা অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। ফলে স্কুল খোলাটা একান্ত জরুরি।
এবিভিপির রাজ্য সম্পাদক সুরঞ্জন দাস বলেন, “আমাদের বিক্ষোভ চলবেই। যতদিন পর্যন্ত না স্কুল খোলা হচ্ছে। রাজ্যের সব কিছু যখন খোলা হচ্ছে, তখন স্কুল কেন খোলা হবে না? রাজ্য সরকার এটা কেন বুঝতে পারছে না, আমাদের ছাত্র সমাজ ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। আমরা আমাদের আন্দোলনকে এই দাবিতে জিইয়ে রাখব।”
প্রসঙ্গত, এদিন সকালেই স্কুল খোলা নিয়ে সরব হন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “ভয় কাটিয়ে মাস্ক পরে স্কুলে যাক পড়ুয়ারা। এখন পড়ুয়াদের ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে। স্কুল যাওয়ার জন্য সাবধানতার প্রয়োজন, ভয়ের পরিবেশ নয়।”
প্রসঙ্গত, স্কুল খোলার দাবিতে গত সোমবার বিকাশ ভবন অভিযান কর্মসূচি নেয় এসএফআই। আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল পুলিশও। স্কুল-কলেজ খোলার দাবিতে মিছিল করে বিকাশ ভবনের দিকে যান এসএফআই কর্মী সমর্থকরা। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা করুণাময়ী পৌঁছতেই পথ আটকায় পুলিশ। রাস্তায় বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন এসএফআই কর্মী সমর্থকরা। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। তাঁদেরকে টেনে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যেতে চায় পুলিশ।
অভিযোগ, পুলিশ একপ্রকার চ্যাঙদোলা করে এসএফআই কর্মী সমর্থকদের রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন এসএফআই কর্মী সমর্থকরা।পরেরদিন মঙ্গলবারও কলেজ স্কোয়ার থেকে স্কুল খোলার দাবিতে মিছিল করে এসএফআই।
Be the first to comment