
রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:- সামনেই বেশ কিছু রাজ্যে নির্বাচন আর তার আগে দলের নতুন রূপরেখা তৈরি করতে গান্ধী-প্যাটেলদের ভূমিকে বেছে নিল জাতীয় কংগ্রেস। মঙ্গলবার থেকে গুজরাটের আহমেদাবাদে শুরু হল অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটি বা এআইসিসির কর্মসমিতির বৈঠক।
গত এক দশকের বেশি সময় ধরে কেন্দ্রের পাশাপাশি একের পর এক রাজ্যের মসনদ হাতছাড়া হয়েছে দেশের প্রাচীনতম এই রাজনৈতিক দলের। দেশের দুই কক্ষে সাংসদ সংখ্যা তলানিতে এসে ঠেকেছে। বাংলার মত রাজ্যে বিধায়ক সংখ্যা নেমেছে শূন্যে। চলতি বছরের শেষেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। আগামী বছর বাংলা, অসম, কেরল, তামিলনাড়ুতে বাজবে নির্বাচনী দামামা। গত লোকসভা নির্বাচনে ৯৯ আসন পেয়ে কিছুটা অক্সিজেন পেয়েছে ধুঁকতে থাকা কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতে ৮ ও ৯ এপ্রিল আহমেদাবাদে বসছে কংগ্রেসের বর্ধিত কর্মসমিতির বৈঠক ও অধিবেশন। কোন পথে থামানো যায় বিজেপির অশ্বমেধের ঘোড়া। কীভাবে শক্তিশালী করা যায় সংগঠন। আসন্ন নির্বাচনগুলিতে ‘ইন্ডিয়া’ শরিকদের সঙ্গে কোন ফর্মুলায় হবে জোট বা আসন সমঝোতা। খোঁজা হবে এই ধরনের নানা উত্তর। তবে তার আগেই উঠতে শুরু করেছে গুরুত্বপূর্ণ এক প্রশ্ন। হঠাৎ কেন গুজরাটকে বেছে নিল কংগ্রেস? শেষবার গুজরাটের মসনদে কোনও কংগ্রেসি নেতার বসার ৩০ বছর পার হয়ে গিয়েছে। গত বছরের লোকসভা নির্বাচনে ২৬টির মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছিল মাত্র একটি আসন। বিজেপি পেয়েছিল বাকি সব। ২০২২ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ১৮২টির মধ্যে হাত বেছে নিয়েছিলেন ১৭ কেন্দ্রের ভোটাররা। সেক্ষেত্রে এই বল শূণ্য রাজ্যটাই কেন?
কংগ্রেসের তরফে সরকারিভাবে যা বলা হচ্ছে, তা হল, মহাত্মা গান্ধীর শততম প্রয়াণ বার্ষিকী ও সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের জন্ম সার্ধশর্তবর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতেই গুজরাটকে বেছে নেওয়া। যদিও কংগ্রেসের অন্দরমহলের খবর অন্য। তাদের বক্তব্য, বিজেপির সঙ্গে লড়াই করতে হলে তাদের চোখে চোখ রেখে চলা ছাড়া গতি নেই। এই কারণেই সবরমতীর তীরের রাজ্যকে বেছে নেওয়া।
পরিসংখ্যান বলছে দীর্ঘ ৬৪ বছর পর গুজরাটের মাটিতে এআইসিসি-র অধিবেশনের আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে প্রথমবার ১৯০২ সালের ২৩ থেকে ২৬ ডিসেম্বর আহমেদাবাদে বসেছিল কংগ্রেসের আধিবেশন। পাঁচ বছর পর আরেক বঙ্গসন্তান রাসবিহারী ঘোষের নেতৃত্বে সুরাটে হয় কংগ্রেসের অধিবেশন। এরপর ১৯২১ সালে আহমেদাবাদের পর ১৯৩৮ সালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সভাপতিত্বে বিখ্যাত সেই হরিপুরা কংগ্রেস। শেষবার ১৯৬১ সালে ভাবনগরের পর ৬৪ বছর বাদে মল্লিকার্জুন খারগের সভাপতিত্বে ফের গুজরাটের মাটিতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে কংগ্রেসের অধিবেশন। এই অধিবেশনকে কেন্দ্র করে গোটা আহমেদাবাদে সাজো সাজো রব।
Be the first to comment