ভোট আবহে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠলো কোচবিহার। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল এক যুবকের। মৃতের নাম প্রশান্ত সাহা। যুবকের মৃত্যুতে তুলকালাম শহর। স্থানীয়রা পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। অবরোধ তুলতে কড়া পদক্ষেপ করে পুলিশ। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেলে ফাটানো হয় টিয়ার গ্যাসের সেল।
কোচবিহার শহরেই প্রশান্তের সোনার দোকান ছিল। অনান্য দিনের মতো বৃহস্পতিবার সকালে নিজের দোকানেই বসে ছিলেন প্রশান্ত। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, বাইকে দুই যুবক তাঁর দোকানের সামনে এসে দাঁড়ায়। হেলমেট ও মুখে মাস্ক থাকায় দু’জনের কারোরই মুখ দেখতে পাননি স্থানীয়রা। এমনকি প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, বাইকে ছিল না কোনও নম্বর প্লেটও।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, আতর্কিতে বাইক থেকে প্রশান্তকে লক্ষ্য করে পরপর তিনটি গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। তিনটি গুলিই প্রশান্তের গায়ে লাগে। ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে যান অনান্য দোকানিরা। প্রতিবেশী, স্থানীয়দের কথায়, প্রশান্ত এলাকায় নিরীহ ছেলে বলেই পরিচিত ছিলেন।
কারোর সঙ্গে আগে কোনওদিনও ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়নি তাঁকে। শান্ত স্বভাবের প্রশান্তের জীবনযাপনও ছিল ছিমছাম। সকলের সঙ্গেই ভদ্র আচরণই করতেন প্রশান্ত। তাঁর এই পরিণতিতে রীতিমতো অবাক সকলেই। কারাই বা প্রশান্তকে লক্ষ্য করে গুলি চালাল, তার পিছনে কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে, কোনও সূত্রই খুঁজে পাচ্ছেন না পরিবারের সদস্যরা।
ঘটনার পরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকায়। টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয়রা। পথ অবরোধও করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে রীতিমতো বেগ পেতে হয় পুলিশকে। প্রথমে বুঝিয়ে অবরোধ তোলার চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু তাতে কাজ হয় না। রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। টিয়ার গ্যাসের সেল ছোড়ে পুলিশ। এলাকা থেকে উদ্ধার হয় গুলির খোল।
প্রতিবাদে কোচবিহারে কোতোয়ালি থানার সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয়রাও। থানার থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে কীভাবে গুলি করে খুন করা হল যুবককে, নিরাপত্তা কোথায়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। এদিকে, বৃহস্পতিবারই কোচবিহারে সভা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তার মধ্যেই রীতিমতো খণ্ডযুদ্ধের চেহারা নিল এলাকা।
Be the first to comment