পর পর তিন দিন পাঁচশোর ঘরে ছিল। চতুর্থ দিনে সওয়া ছ’শোয় পৌঁছে গিয়েছিল রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। পঞ্চম দিনেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই শেষ ২৪ ঘণ্টায় বাংলায় করোনায় আক্রান্ত হলেন ৬৫২ জন মানুষ।
তবে, ছাড়াও পেয়েছেন ৪১১ জন মানুষ। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যখন লাফিয়ে বাড়ছে, এমন পরিস্থিতিতে ডেঙ্গি যাতে মাথাব্যথার কারণ না হয়ে দাঁড়ায় তাই দফতরগুলিকে বাড়তি দায়িত্ব নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। ডেঙ্গি মোকাবিলায় যুক্ত সমস্ত দফতরের সচিবদের নিয়ে কোর কমিটির বৈঠক করেন মুখ্যসচিব। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, করোনা মোকাবিলায় রাজ্যজুড়ে যে বাড়ি বাড়ি সার্ভে চলছে সেই নজরদারির আওতায় এ বার যুক্ত হবে ডেঙ্গিও।
সূত্রের খবর, করোনার ‘অজুহাতে’ বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গির নজরদারিতে খামতি দেওয়া চলবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যসচিব। করোনা মোকাবিলায় বাড়ি বাড়ি যে সার্ভে চলছে, তাতে ডেঙ্গির উপসর্গ জানার জন্য বাড়তি প্রশ্ন যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বৈঠকে।
প্রসঙ্গত, সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন ইতোমধ্যেই রাজ্যের আড়াই কোটি বাড়িতে ১৬ কোটি বার (এক এক বাড়িতে বেশ কয়েক বার ভিজিট করেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা) ভিজিট করেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। এ বার তাঁরা একই সঙ্গে ডেঙ্গির উপসর্গ আছে কি না, সেটাও দেখবেন। লকডাউনের জেরে বন্ধ থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যাতে ডেঙ্গির আঁতুড়ঘরে পরিণত না-হয়, তার দিকেই নজর দিতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলিকে।
সোমবার স্বাস্থ্য দপ্তরের বুলেটিন জানাচ্ছে, ৯৬১৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৬৫২ জন কোভিড পজিটিভের খোঁজ মিলেছে রাজ্যে। এর মধ্যে সর্বাধিক রোগী চিহ্নিত হয়েছেন কলকাতায় (২৩১), তার পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা (১৩৫) ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা (৬২)। ফলে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৮,৫৫৯। অবশ্য ৪১১ জনের রোগমুক্তিও ঘটেছে গত ২৪ ঘণ্টায়।
ফলে মোট করোনাজয়ীর সংখ্যা বাংলায় হল ১২,১৩০। করোনা মুক্তির হার এখন ৬৫.৩৫%, যা সারা দেশের তুলনায় অনেকটাই ভালো। বর্তমানে করোনা নিয়ে চিকিৎসাধীন (অ্যাক্টিভ কেস) ৫৭৬১ জন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবারই টুইট করে জানান, কোভিডের মোকাবিলায় রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো যথেষ্টই ভালো। কিন্তু এর পরেও মাস্ক পরা, ফিজিক্যাল ডিস্ট্যান্সিং মেনে চলার মতো বিষয়গুলিতে সকলকে জোর দিতে হবে। চিকিৎসাকর্মী-সহ সব ধরনের ‘ফ্রন্টলাইনার্স’ এবং স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে বিলি করতে তাঁর সরকার যে তিন কোটি মাস্ক কিনছে, সে কথাও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিনও সাংবাদিক বৈঠক থেকে তিনি জানান, সাধারণ মানুষ রাস্তাঘাটে সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং কিংবা মাস্ক ঠিকঠাক পরছেন কিনা, সেদিকে পুলিশকে খেয়াল রাখতে হবে। একই কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।
Be the first to comment