গোটা দেশেই বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। মহারাষ্ট্র, দিল্লির মতো রাজ্যে যতটা দ্রুত ছড়াচ্ছে মারণ ভাইরাস, এ রাজ্যের ক্ষেত্রে অবশ্য ততটা নয়। এদিন বিকেলে যে বুলেটিন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে ১১০ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যে এই মুহূর্তে হোম কোয়ারানটিনে আছেন ৩৯১৭৮ জন। ১৭২৯৪ জন তাঁদের কোয়ারানটিনে কোঠা পূর্ণ করেছেন। এখনও পর্যন্ত ২২৭০ জনকে হাসপাতালে রেখে আইসোলেশন করা হয়েছে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছে ১৮৪৮ জনকে। এই মুহূর্তে হাসপাতালে আইসোলেশনে রয়েছে ৪২২ জন। আর এখন পর্যন্ত রাজ্যের ২৭৯৩ জনের করোনা টেস্ট হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতেও অবশ্য পরিস্থিতি কড়া হাতে মোকাবিলা করতে চাইছে রাজ্য সরকার। রাস্তায় বার হলে মাস্ক পরতেই হবে। করোনা মোকাবিলায় এই নিয়ম চালু করেছে রাজ্য সরকার। রবিবার থেকে রাজ্যে এমন নিয়ম চালু হয়েছে। রাতে মুখ্যসচিবের স্বাক্ষরিত এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করা হয়।
করোনা সংক্রমণ রুখতে দিল্লি, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা, পঞ্জাব-সহ একাধিক রাজ্যে ইতোমধ্যে প্রকাশ্য স্থানে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। নিয়ম না মানলে অভিযুক্তের মোটা অংকের জরিমানার পাশাপাশি জেলযাত্রা হতে পারে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের প্রশাসন। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ওই পথেই পা বাড়াতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ। খুব শীঘ্রই এই রাজ্যেও প্রকাশ্য স্থানে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হল। কোনও ব্যক্তি এই নিময় না মানলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ করবে প্রশাসন। এমনকী ওই ব্যক্তিকে রাস্তা থেকে পুলিশ বাড়িতে ফিরিয়ে দেবে বলেও জানা গিয়েছে।
তবে রাস্তায় বার হতে গেলে সাধারণ মানুষকে N95 মাস্ক বা সার্জিক্যাল মাস্ক পরতে হবে, তা নয়। সাধারণ পরিচ্ছন্ন কাপড়ের মাস্ক, রুমার, ওড়না, গামছা ইত্যাদি দিয়ে মুখ ঢেকে রাখলেও চলবে।
দিল্লি, মহারাষ্ট্র, কেরালা, তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট বা উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যের থেকে পশ্চিমবঙ্গের করোনা পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে অনেকটাই ভালো। ইতোমধ্যে রাজ্যে লকডাউনের মেয়াদ ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। সেইসঙ্গে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার উপরে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি মাস্ক পরা সংক্রান্ত নির্দেশিকায় বদল আনে কেন্দ্রীয় সরকার। শুধুমাত্র সর্দি, কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মাস্ক পরা প্রয়োজন বলে প্রথমে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছিল। কিন্তু এখন ঘরের বাইরে বেরোলেই প্রত্যেককে মাস্ক পরার কথা বলা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ঘরে তৈরি বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য মাস্ক পরার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে।
Be the first to comment