বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। লাগামহীন সংক্রমণে রাশ টানতে এবার বড় জমায়েত বাতিলের সিদ্ধান্ত নিল CPI(M)। বুধবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানান CPM-এর পলিটব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিম।
এদিন আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সাংবাদিক বৈঠকে সেলিম জানান, ‘চার দফায় ভোট হয়েছে রাজ্যে। পঞ্চম দফার প্রচারও একেবারেই শেষ লগ্নে। এদিকে রাজ্যে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে আগামী তিন দফার নির্বাচনী প্রচারে কোনও বড় ভিড় না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। এছাড়াও প্রচারে গিয়ে করোনা সম্পর্কিত স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে দেওয়া হবে বিশেষ নজর।’
সেলিম আরও বলেন, ‘করোনা আক্রান্তদের পাশে থেকেছে CPM। বর্তমান পরিস্থিতিতেও তার ব্যতিক্রম হবে না। আক্রান্তদের পাশে থাকব।’ এই প্রবীণ বাম নেতার কথায়, প্রচারের ক্ষেত্রে ছোট পথসভার উপর গুরুত্ব বাড়ানো হবে। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে গুটিকয়েক পরিবারের সদস্যদের নিয়ে করা হবে বৈঠক। শুধু তাই নয় এবার প্রচারের জন্য ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রচারে জোর দেবে বামেরা, জানিয়েছেন সেলিম।
এদিকে এদিন প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীকে একযোগে নিশানা করেন তিনি। সেলিম বলেন, ‘দুজনেই মেরুকরণের রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত।’ পাশাপাশি লকডাউনে আদৌ কোনও লাভ হয়নি দাবি এই বাম নেতার। তিনি বলেন, ভ্যাকসিন নিয়ে উদাসীন দুই সরকারই।
প্রসঙ্গত, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিগত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৫ হাজার ৮৯২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের। মার্চ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে ছিল করোনার দৈনিক সংক্রমণ। কিন্তু এপ্রিলের শুরুর থেকেই ঊর্ধ্বমুখী করোনার গ্রাফ। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ।
মঙ্গলবার রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ৪ হাজার ৮১৭ জন, মৃত্যু হয়েছিল ২০ জনের। মাত্র একদিনে সেই সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১ হাজার। এই মুহূর্তে রাজ্যে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩২ হাজার ৬২১ জন। ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৩০ হাজার ১১৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১০ হাজার ৪৫৮ জনের। কমছে রাজ্যের সুস্থতার হারও।
এই মুহূর্তে রাজ্যে সুস্থতার হার ৯৩.১৬ শতাংশ। ভোটমুখী বাংলায় প্রচারের বাড়বাড়ন্ত চিন্তা বাড়াচ্ছে প্রশাসন। এদিকে করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের কথায়, বিভিন্ন প্রচার মিছিলে উপস্থিত জনতাদের মধ্যে সচেতনতার অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মুখে নেই মাস্কও। আর এই অসচেতনতাই বাড়াচ্ছে বিপদ।
Be the first to comment