তৃতীয় দফার লকডাউন শেষ হচ্ছে ১৭ মে। তার আগেই ৬০ হাজার পেরিয়ে গেল দেশ জুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় আক্রান্ত ১২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৩ হাজার ২৭৭ জন। রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। তাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২ হাজার ৯৩৯ জন। সুস্থ হয়েছেন ১৯৩৫৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ২০১৯ জনের।
গোটা দেশে সংক্রমিতের তিন ভাগের এক ভাগ আক্রান্ত হয়েছেন মহারাষ্ট্রেই। ওডিশায় করোনায় আক্রান্ত আরও ৫৮ জন, রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫২। রাজস্থানে নতুন করে ৩৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। সেখানে সব মিলিয়ে আক্্রান্ত হয়েছে ৩ হাজার ৭৪১। মৃত ১০৭। বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস, মাসখানেকের মধ্যেই দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা শিখর ছোঁবে। দেশকে সে পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত করতে শুরু করেছে কেন্দ্র। রোগের প্রকোপ বাড়লে দেশে করোনার চিকিৎসাকেন্দ্রে টান পড়তে পারে, সে সম্ভাবনা মাথায় রেখে খালি হোটেল, লজ ব্যবহারে উদ্যোগী হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক৷ বেড সংখ্যায় টান পড়া ঠেকাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্তদের যাতে দ্রুত ছেড়ে দেওয়া যায়, সে জন্যও শনিবার নির্দেশিকা জারি করেছে আইসিএমআর। প্রশ্ন উঠছে, চিনের মতো ভারতও কি সব রাজ্যে তৈরি করতে পারত না ‘মেক শিফট’ কোভিড হাসপাতাল?
বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় তুলনামূলক ভালো পদক্ষেপ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্য। ইতোমধ্যেই রাজ্যের ১৬টি সরকারি এবং ৫২টি বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৮৫৭০ বেড চিহ্নিত করা হয়েছে করোনা চিকিৎসার জন্য। জলপাইগুড়ির কোভিড হাসপাতাল হয়েছে বিশ্ব বাংলা ক্রীড়াঙ্গনে। স্টেডিয়ামের ডরমেটরিতে রাতারাতি তৈরি হয়েছে কোভিড এবং সারি রোগীদের রাখার ব্যবস্থা। ৮টা কেবিনে ভেন্টিলেটর বসিয়ে এইচডিইউও তৈরি হয়েছে। আলিপুরদুয়ারেও কম-ব্যবহৃত আয়ুষ হাসপাতাল রাতারাতি বদলে গিয়েছে কোভিড হাসপাতালে। খাস কলকাতায় তৈরি হয়ে পড়ে থাকা সিএনসিআই-এর দ্বিতীয় ভবনকে রূপান্তরিত করা হয়েছে কোভিড হাসপাতালে।
এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘অনেক কোভিড হাসপাতালেই শুধু ভবনটা ছিল। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য বেড, অক্সিজেন, ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্য সরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসাকর্মী পাঠানোরও বন্দোবস্ত হয়েছে।’ করোনা মোকাবিলায় রাজ্যের এক্সপার্ট গ্রুপের সদস্য অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘মাইল্ড কেসে রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি রাখার প্রয়োজনই পড়ে না যদি তিনি ঠিকমতো আইসোলেশন মেনে চলতে পারেন। কিন্তু আমাদের মতো দেশে সেটা সম্ভব নয়। তাই, করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লে যাতে প্রত্যেকে সাধারণ স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর সুযোগটুকু পান, সে ব্যবস্থা প্রয়োজন। রাজ্যে আমরা সেই ব্যবস্থাই করছি।’
Be the first to comment