করোনা রোগীর মৃত্যুতে ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া নিয়ে সংশোধিত নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য সরকার। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কোনও করোনা রোগীর বাড়িতে মৃত্যু হলে, যে চিকিৎসকের অধীনে সরাসরি অথবা ভার্চুয়ালি তাঁর চিকিৎসা চলছিল, সংশ্লিষ্ট সেই চিকিৎসকও ডেথ সার্টিফিকেট দিতে পারবেন।
হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করার সময় মাঝরাস্তায় তাঁর মৃত্যু হলে সেক্ষেত্রে যে হাসপাতালে তিনি ভর্তি ছিলেন তারাই ইস্যু করবে ডেথ সার্টিফিকেট।এছাড়াও, করোনা রোগীর শেষকৃত্য নিয়েও সংশোধিত নির্দেশিকায় বেশ কিছু নিয়ম জারি করা হয়েছে। কলকাতার ক্ষেত্রে মৃত করোনা রোগীর পরিবারকে কলকাতা পুরসভার চিফ হেলথ মেডিক্যাল অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
শহরতলির ক্ষেত্রে যোগাযোগ করতে হবে সংশ্লিষ্ট পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে। গ্রামীণ এলাকার ক্ষেত্রে বিডিও ও বিএমওএইচ-এর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে মৃত করোনা রোগীর পরিবারকে।
সাম্প্রতিককালে, রাজ্যবাসী প্রত্যক্ষ করেছে, কীভাবে করোনায় মৃত রোগীর দেহ পড়ে রয়েছে। সৎকার না হওয়ায় বাড়িতেই পচন ধরছে দেহে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে উঠে এসেছে একই ভয়ঙ্কর চিত্র।
ঘরে পড়ে থেকে, অসহায়ভাবে মৃত্যু হচ্ছে করোনা আক্রান্তদের। কিন্তু, ভয়ে মৃতদেহ সরাতে এগিয়ে আসছেন না কেউ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়ে থাকছে সেই দেহ।
শুধু বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবারের মধ্যেই সামনে এল এমন ছ’টি ঘটনা! কোথাও মৃতদেহ পড়ে রইল বারো ঘণ্টা, কোথাও ষোল ঘণ্টা। আবার কোথাও মৃতদেহ পড়ে ছিল প্রায় ২৪-ঘণ্টা। মৃতদেহের পাশে বসে অসহায়ভাবে অপেক্ষা করতে হল পরিজনদের।
নদিয়ার কৃষ্ণনগরে বিপ্লব সাহা নামে কোভিড আক্রান্ত প্রৌঢ় বৃহস্পতিবার রাত ২টোর সময় মারা যান। অবশেষে শুক্রবার বিকেল মৃতদেহ সরিয়ে নিয়ে যায় প্রশাসন!
নদিয়ার শক্তিনগরে ৭০ বছরের গৌতম চৌধুরী করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টের সময় বাড়িতেই মারা যান। ২৪ ঘণ্টা তাঁর মৃতদেহ পড়ে থাকে বাড়িতেই!
কলকাতার গড়ফায় বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যু হয় ৭৭ বছর বয়সী এক বৃদ্ধার। বৃহস্পতিবার রাত ৮ টা থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত প্রায় ষোল ঘণ্টা বাড়িতেই পড়ে থাকে করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধার মৃতদেহ।
তিলজলার পিকনিক গার্ডেনের বাসিন্দা মায়া দাসের কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট আসে ১৯ এপ্রিল। বারবার স্বাস্থ্যভবনে চেষ্টা করেও বেড মেলেনি। ২২ এপ্রিল সকালে মারা যান বৃদ্ধা। তারপর দশ ঘণ্টা বাড়িতেই পড়ে থাকে মৃতদেহ।
Be the first to comment