দেশজুড়ে করোনা বাড়ছে। এ রাজ্যে ইতিমধ্যেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ কার্যত শুরু হয়েছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কলকাতাতেও করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। এবারে সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই শহর কলকাতার একাধিক বেসরকারি স্কুল সশরীরে ক্লাস করানো বন্ধ করার পথেই হাঁটতে চলেছে। বিশেষত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস শুরুর কথা জানিয়েছিল রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর গত ১২ই ফেব্রুয়ারি। যদিও বর্তমান করোনা পরিস্থিতি কথা মাথায় রেখে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সরাসরি ক্লাস করানো যাবে না এমন কোন নির্দেশিকা এখনও পর্যন্ত রাজ্যের তরফে দেওয়া হয়নি।
কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এক প্রকার একাধিক বেসরকারি স্কুল কার্যত সশরীরে ক্লাস বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উল্লেখযোগ্য ভাবে, এই তালিকায় রয়েছে ডন বস্কো, শ্রী শিক্ষায়তন, রুবি পার্ক দিল্লি পাবলিক স্কুল, বালিগঞ্জ শিক্ষা সদন, সাউথ পয়েন্টের মতো একাধিক বেসরকারি স্কুল।
মূলত করোনা সংক্রমনের কথা মাথায় রেখেই যাতে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা ও সংক্রমিত না হয় সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শ্রী শিক্ষায়তন স্কুল এর সচিব ব্রততী ভট্টাচার্য বলেন “যে হারে করো না বাড়ছে মূলত সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা আপাতত স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের আসতে বারণ করে দিয়েছি। যবে থেকে স্কুল খুলে ছিল তবে থেকেই উপস্থিতি খুব একটা ভালো ছিল না ছাত্র-ছাত্রীদের। তার জন্যই এবার আমরা স্ব-শরীরে ক্লাসের বদলে অনলাইনে ক্লাস করাবো।”অন্য দিকে বালিগঞ্জ শিক্ষা সদনের প্রিন্সিপাল সুমিতা সেন বলেন “বর্তমান করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে একপ্রকার বাধ্য হয়ে আমরা আপাতত অনলাইনে ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আগামী সোমবার থেকে সব ক্লাস অনলাইনেই হবে এবং সব পরীক্ষা অনলাইনেই নেওয়া হবে।”ইতিমধ্যেই সাউথ পয়েন্ট স্কুলের তরফেও অনলাইনে ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত। কার্যত একই পথে হেঁটেছে দিল্লি পাবলিক স্কুল রুবি পার্ক কর্তৃপক্ষ ও।
তবে বেসরকারি স্কুল গুলি একের পর এক সশরীরে ক্লাস না করানোর সিদ্ধান্ত নিল আপাতত সরকারি স্কুল গুলির কাছে কোনো উপায় নেই। একাধিক সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রধান শিক্ষিকা রা জানিয়েছেন যেহেতু রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তরের তরফে কোন নির্দেশিকা গাইড লাইন আসেনি তাই স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে স্কুল বন্ধ করার সিদ্ধান্তের দিকে তারা যেতে পারছেন না।
যদিও কলকাতার একাধিক সরকারি এবং সরকারি অনুমোদিত স্কুল থেকে ছাত্র ছাত্রীদের করোনা সংক্রমণ হওয়ার খবর এসেছে। অবশ্য যে যে স্কুল থেকে এই ধরনের খবর এসেছে সেই স্কুলগুলিতে টানা ১৫ দিন করে ছুটি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক। যদিও রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তর অবশ্য স্কুল ছুটির ব্যাপারে স্কুলগুলির সিদ্ধান্তের ওপরই ছেড়ে দিয়েছে বলেই দপ্তর সূত্রে খবর। কিন্তু স্কুলগুলি সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দিলেও রাজ্য সরকারের তরফে যেহেতু এখনও পর্যন্ত কোন গাইডলাইন বা নির্দেশিকা এসে পৌঁছায়নি তাই কার্যত কিছুটা হলেও ধন্দে রয়েছে সরকারি স্কুল গুলির একাধিক প্রধান শিক্ষক প্রধান শিক্ষিকারা।
Be the first to comment