ঘনঘন রূপ বদল করে নতুন আতঙ্ক তৈরি করা করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে দেশবাসীর প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে তুলতে এবার বুস্টার বা প্রিকশন ডোজ দেওয়া শুরু হল দেশে। সোমবার থেকে সেই টিকাপ্রদানের কাজ শুরু হয়েছে এ রাজ্যেও। প্রাথমিকভাবে প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ প্রথম সারির যোদ্ধা পাবেন টিকার বুস্টার ডোজ। এছাড়া কো-মর্বিডিটি যুক্ত ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিরা প্রথম ধাপেই এই ডোজ পাবেন। কো-উইন অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন না করলেও ঝক্কি নেই। সহজেই টিকাশিবির থেকে বুস্টার ডোজ পেতে পারবেন তাঁরা। এমনই খবর স্বাস্থ্যভবন সূত্রে।
কেন্দ্রের নিয়ম অনুযায়ী, প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ সম্পূর্ণ করার ৯ মাস পর নেওয়া যাবে টিকার বুস্টার ডোজ। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে যখন দেশে কোভিড টিকাকরণের কাজ শুরু হয়, তখন সবার আগে তা দেওয়া হয়েছিল প্রথম সারির করোনা যোদ্ধা অর্থাৎ চিকিৎসক, নার্স, পুলিশ, সেনাবাহিনীর জওয়ানদের। কারণ, তাঁরাই করোনা মোকাবিলার নানা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন। তার তাঁদের সুরক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছিল একেবারে প্রথম ধাপে।
সেই টিকাকরণের বছর ঘুরছে। ৯ মাসের বেশি সময়ই অতিবাহিত হয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এবার সেসব প্রথম সারির যোদ্ধাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তলানিতে ঠেকেছে। তাই সবার আগে তাঁদের বুস্টার ডোজ দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করছেন তাঁরা। রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরও সেই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সবার আগে তাঁদের বুস্টার ডোজ দানে জোর দিয়েছে। হিসেবমতো, প্রাথমিকভাবে সাড়ে ৫ লক্ষ চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী পাবেন এই ডোজ।
জানা গিয়েছে, বুস্টার ডোজের ক্ষেত্রে কোনও ককটেল নয়। অর্থাৎ আগে যে যা টিকা পেয়েছিলেন, বুস্টারও নিতে হবে তারই। অর্থাৎ যিনি আগে কোভ্যাক্সিনের ডোজ নিয়েছিলেন, তিনি বুস্টারও পাবেন কোভ্যাক্সিনের। আর কোভিশিল্ড পাওয়া ব্যক্তিরা কোভিশিল্ডই পাবেন বুস্টার ডোজে। সেইমতো ডোজ রাজ্যের হাতে এসেছে পর্যাপ্ত। তা দিয়েই সোমবার থেকে শুরু হল বুস্টার ডোজ দেওয়ার কাজ।
প্রথম সারির যোদ্ধাদের পাশাপাশি সোমবার থেকেই করোনার বুস্টার ডোজ পাচ্ছেন ষাটোর্ধ্ব নাগরিকরা, যাঁদের শরীরে কো-মর্বিডিটি রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে তাঁদের টিকা নেওয়ার কাজ আরও সহজ করা হয়েছে। কো-উইন অ্যাপে আগে থেকে রেজিস্ট্রার করা না থাকলেও কোনও সমস্যা নেই। নিকটবর্তী টিকাশিবিরে আধার কার্ড কিংবা আগের ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট দিলেই হবে। সেখানেই অনলাইন পোর্টালে পরীক্ষা করে তাঁদের বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে।
এছাড়া হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় গাইডলাইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিয়মে সামান্য রদবদল এনেছে স্বাস্থ্যদপ্তর। ৭ দিন হোম আইসোলেশনে থাকাকালীন নিয়মিত শরীরের তাপমাত্রা, অক্সিজেন স্যাচুরেশন পরীক্ষা করতে হবে, তা আগেই বলা হয়েছিল। অক্সিজেনের মাত্রা ৯৩ এর নিচে নামলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রচুর জল এবং প্যারাসিটামল জাতীয় ট্যাবলেট খেতে হবে। পরপর ৩ দিন জ্বর-কাশি না হলে, শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক থাকলে আর করোনা টেস্টের দরকার নেই। ধরে নেওয়া হবে, তাঁরা কোভিডমুক্ত।
Be the first to comment