এবার কলকাতা মডেল! জট ছাড়িয়ে পুরভোটে কৌশলী জোটের পথে বাম ও কংগ্রেস

Spread the love

গত পুরভোটে ছিল শিলিগুড়ি মডেল। এবার কলকাতা মডেল। জোটের সিদ্ধান্ত নেবে নিচুতলা। সিদ্ধান্ত বাম ও কংগ্রেস (নেতৃত্বের। একশো শতাংশ নয় বরং কৌশলী জোটে জোর দেওয়ার নির্দেশ পাঠিয়েছে আলিমুদ্দিন ও বিধানভবন। সেইসঙ্গে প্রার্থী তালিকায় যতো বেশি সম্ভব ছাত্র-যুব ও মহিলাদের মধ্য থেকে নতুন মুখ রাখাতে হবে। রাজ্যের নির্দেশ মতোই এগোচ্ছে দু’পক্ষের নিচুতলা। তবে কৌশলী জোট করতে গিয়ে চার পুরনিগমেই জট পাকার প্রবল সম্ভবনা কারণ ইতিমধ্যেই বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় যাবে না জেলা নেতৃত্বকে নির্দেশ পাঠিয়েছে।

এক সময় সাড়া ফেলেছিল শিলিগুড়ি মডেল। পুরভোট জোট করে কিছুটা হলেও সাফল্য পায় বাম-কংগ্রেস জোট। এখন তা অতীত। বিধানসভা ভোটে মুখ থুবড়ে পরেছে শিলিগুড়ি মডেল। তাই শিলিগুড়ি পুরসভায় জোট হলেও অন্য জায়গায় তা প্রশ্নের মুখে। জোট না হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। আসানসোলেও ভোটের মুখে জট পেকেছে জোটে। কারণ, কংগ্রেস ১০৬টি ওয়ার্ডেই প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। জোট হবে না ধরে নিয়েই একক লড়াইয়ের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বামেরাও। চন্দননগরে জোট হবে না বলেই মনে করছে দু’পক্ষই। ভোট ঘোষণা হয়ে গেলেও এখনও মুখোমুখি বসতে পারেনি বাম ও কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব। তবে বাম শিবির প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করেছে বলে জানা গিয়েছে।

আসানসোলে গত পুরভোটেও জোট ছাড়াই ১০৬টি ওয়ার্ডে লড়াই করে বাম ও কংগ্রেস। বামেরা জয় পায় ১৭ টি ওয়ার্ডে। কংগ্রেস পেয়েছিল ৩টি আসন। ২০১৯ সালের লোকসভা কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হয়নি বামেদের। সেখানে কংগ্রেসের প্রাপ্য ভোট ২১ হাজার ৩৩। সিপিএম পায় ৮৭ হাজার ৬০৮। লোকসভা ও বিধানসভার সমীক্ষা বলছে কংগ্রেসের ভোট অনেকটাই কমে গিয়েছে। জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের মতে, পুরভোট হল একেবারে স্থানীয় বা লোকাল ভোট। সেখানে সারা বছর যে কংগ্রেস কর্মী দলটা করেন, মানুষের পাশে থাকেন। তাঁর অধিকার ভোটে দাঁড়ানো। তাই কংগ্রেস জোটের পক্ষে নয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় নেতৃত্ব।

তবে বিক্ষিপ্ত কিছু আসনে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ একেবারেই লোকাল মতে জোট হলেও হতে পারে। সেটা সিদ্ধান্ত নেবে জেলা নেতৃত্বে। অন্যদিকে, সিপিআইএম জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা ১০৬টি ওয়ার্ডে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত। সঠিক সময় ভোট হোক আমরাই দাবি তুলেছিলাম। কলকাতা ভোটের ফলাফলেই প্রমাণিত বামেরা নিজেদের ভোট বাড়াতে সক্ষম হচ্ছে।” সিপিআইএম ব্যক্তি নির্ভর দল নয়, দলগত সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে জানান তিনি। ফলে এই পুরসভায় বাম ও কংগ্রেসের একশো শতাংশ জোট হচ্ছে না বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

অন্যদিকে, শিলিগুড়িতে জোট নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগেই কংগ্রেসকে চাপে রাখতে ৩৫টি আসনে প্রথম দফার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বামেরা। তালিকায় প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে লড়াই করবেন জানানো হয়েছে। জোট চূড়ান্ত না করেই বামেরা ১২টি আসন ছেড়ে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করায় ক্ষুব্ধ দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। দলের তরফে ১৫টি আসন দাবি করা হয়েছে। এদিন রাতে বাম ও কংগ্রেস সমঝোতার বৈঠক ভেস্তে যায়। ফের আলোচনায় বসার কথা দুই শিবিরের নেতৃত্বের।

দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি শংকর মালাকার বলেন, “আমাদের ১৫টি আসন ছাড়তে হবে। এটা নিয়ে ফের আলোচনায় বসব।” ওই বিষয়ে দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্ট আহ্বায়ক জীবেশ সরকার জানান, আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা চলবে। এদিকে রাজ্যের পুরসভা ভোটে জোটের বল বামেদের দিকেই ঠেললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি দাবি করেন, জোট থেকে কংগ্রেস কোনও দিনই সরেনি। তাই জোট স্থানীয় নেতৃত্ব চাইছে বলেই হচ্ছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*