মিছিলের ওপরে ভাসছে আনিস খান, সুদীপ্ত গুপ্তদের ‘মুখ’। সাদা লাল পতাকায় ঢাকা পড়ছে রাজপথ। মঙ্গলবার বেলা বাড়তেই এমন ছবি দেখা গেল ধর্মতলা চত্বরে। যে সভায় প্রথম থেকে পুলিশের অনুমতি ছিল না, সেই সভায় জন সমাবেশ নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন বামেরা। আর সভার শুরু থেকেই দেখা গেল তারই প্রতিফলন। ভিক্টোরিয়া হাউস থেকে শুরু করে গোটা ধর্মতলা চত্বর কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে যায় তরুণ নেতা-কর্মীদের সমাবেশে। পরে সেই ইনসাফ সভায় দেখা গেল এক নজিরবিহীন ঘটনা। আচমকাই বদলে গেল সভাস্থল।
ভিড় এত বেড়ে যায় যে বাম নেতা মহম্মদ সেলিম, তন্ময় ভট্টাচার্যরা কার্যত সভামঞ্চেই উঠতে পারেননি প্রথমে। ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে খুব বড় জমায়েতের জায়গা নেই। আর সেখানেই ছিল অস্থায়ী সভামঞ্চ। যে মুহূর্তে ভিড় বেড়ে যায়, প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়, সেই সুযোগই কাজে লাগিয়ে দেন ছাত্র-যুবরা। মীনাক্ষী, সায়নদীপরা এগিয়ে আসেন ভিক্টোরিয়া হাউসের দিকে। ঠিক যেখানে ২১ জুলাইয়ের সভা করে তৃণমূল, তারই অদূরে শুরু হয় সভা। যেখানে একসময় অমিত শাহ এসে সভা করেছিলেন, কার্যত প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ ছুড়েই এ দিন সেই জায়গাতেই সভা শুরু করেন বামেরা।
একটি চলমান গাড়িতেই সভা চলছিল, তাই পরিবর্তন করা যায় সহজেই। কিছুটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হলেও, তা সামলে নেন তরুণ নেতারা। উপস্থিত বাম কর্মীদের গলায় আত্মবিশ্বাসের সুর আরও চড়া হয়। অনেকেই বলেন, ‘আমরা করে দেখিয়ে দিলাম, পুলিশ চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।’ সমাবেশ যে কার্যত বিক্ষোভের চেহারা নিয়েছে, তাও বিনা দ্বিধায় মেনে নিলেন নেতারা। বললেন, এই সরকারের সঙ্গে কোনও আপোষ নয়, এ ভাবেই সভা চলবে জায়গায় জায়গায়।
যে জায়গায় সভা করার অনুমতি পাননি বাম নেতারা, যেটা শাসক দলের পছন্দের জায়গা, সেখানেই এ দিন একে একে বক্তব্য পেশ করেন বাম নেতা মহম্মদ সেলিম, নেত্রী মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায় সহ অনেকেই। এ দিনের সভায় ছিলেন আনিস খানের বাবা সেলিম খানও। এই প্রসঙ্গে মীনাক্ষী বলেন, ‘যে কোনও জায়গায় সভা করার গণতান্ত্রিক অধিকার আছে, তাই এখানে সভা করা হয়েছে।’ অন্যদিকে, বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী দাবি করেন, এবার থেকে ধর্মতলার যেখানে চাইবেন সেখানেই সভা করবেন বামেরা।
Be the first to comment