ব্রিগেডে চাঁদিফাটা রোদ থেকে বাঁচতে ১ লক্ষ গামছার বায়না সিপিএমের, মঞ্চ হচ্ছে দক্ষিণী কায়দায়

Spread the love

চিরন্তন ব্যানার্জি (এক্সক্লুসিভ):- বৈশাখের তীব্র দাবদাহের মধ্যে সিপিএমের গণসংগঠনের ব্রিগেড সমাবেশ। তাই চাঁদিফাটা রোদের হাত থেকে কর্মী সমর্থকদের বাঁচাতে গ্রাম্য সমাধানকেই বেঁচে নিল বামদের প্রধান শরিক সিপিআইএম। দলীয় সূত্রের খবর, ব্রিগেড সমাবেশে আগত কর্মী সমর্থকদের জন্য প্রায় এক লক্ষ গামছা বায়না দেওয়া হয়েছে।
ব্রিগেড মানেই খোলা আকাশের নিচে রোদ জল ঝড়কে মাথায় নিয়েই খোলা মঞ্চ থেকে নেতৃত্বদের বক্তব্য শোনা। আর, এপ্রিল মাসের শেষের দিকে অর্থাৎ ২০ এপ্রিল দুপুরে এই সমাবেশ হওয়ায় প্রায় ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি থাকতে পারে তাপমাত্রা। আর এই কারণটাই অনেকদিন ধরেই ভাবাচ্ছিলো আয়োজকদের। যেহেতু, কৃষক, ক্ষেতমজুরদের ডাকে এই ব্রিগেড সমাবেশ, তাই গ্রাম্য সমাধানকেই বেছে নিয়েছেন আয়োজকরা।
উল্লেখ্য, রোদ-জলে চাষাবাদ করা কৃষকদের মাথায় বাঁধা থাকে গামছা। সেটিই তাঁদের খাঁ খাঁ মাঠের মধ্যে রোদ থেকে বাঁচার ছায়া৷ তাই গ্রীষ্মের ব্রিগেড সমাবেশে কৃষকদের মাথাতেও বাঁধা থাকবে লাল গামছা৷ মাথায় এই লাল গামছা বেঁধেই মহানগরের রাজপথে মিছিল করে ব্রিগেড যাবেন বিভিন্ন জেলার কৃষক ও ক্ষেতমজুররা।
অন্যদিকে, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্র বা তামিলনাড়ুতে বাম সংগঠনের শ্রমিকদের আন্দোলনে দেখা যায় প্রত্যেকের মাথায় লাল টুপি। এবার সেইরকমই লাল টুপি মাথায় ব্রিগেডের সভায় অংশ নেবে সিপিআইএমের শ্রমিক সংগঠনের কর্মী সমর্থকেরা। তবে পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতি এখনও সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠতে পারেনি, তারা সংগঠনের তরফ থেকে ব্রিগেডে যাওয়া কর্মী-সমর্থকদের কী দেবেন।
ব্রিগেডের সমাবেশ মানেই মূলমঞ্চ কেমন হবে তা নিয়ে সমস্ত দলের কর্মী সমর্থকদের কাছে কৌতুহল থাকে চরমে। তেমনি সিপিআইএমের গণসংগঠনের এই ব্রিগেড সমাবেশের মঞ্চ কেমন হতে চলেছে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই কর্মী সমর্থকদের মধ্যে কৌতুহল চরমে। দলীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, এবার নজিরবিহীন ভাবে দক্ষিণী কায়দায় ত্রিস্তরীয় মঞ্চ তৈরি হবে ব্রিগেড সমাবেশে। পুরো মঞ্চটি হবে ৪৮ ফুট চওড়া ও ২৮ ফুট লম্বা। সেটিকে তিনটি স্তরে ভাগ করা হবে। যার একেবারে সামনের অংশটি হবে ১২ ফুট লম্বা। তার পিছনে ৮ ইঞ্চি উচ্চতায় আরেকটি মঞ্চ ৮ ফুট লম্বা। একইভাবে তৃতীয় ধাপে ৮ ইঞ্চি উচ্চতার আরেকটি ৮ ফুট লম্বা মঞ্চ তৈরি করা হবে। আর মঞ্চের সামনে ৮ ফুট লম্বা ও ৮ ফুট চওড়া একটি অংশ তৈরি হচ্ছে, সেখানে দাঁড়িয়ে বক্তারা বক্তৃতা দেবেন।
প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনের আগে বামেদের প্রধান শরিক সিপিআইএমের চারটি গণসংগঠনের উদ্যোগে এই ব্রিগেড সমাবেশকে ঘিরে প্রচার ও প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে। মাঠ ভরাতে আয়োজন বিরাট। বর্তমান পরিস্থিতিতে লোক জমায়েত করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তাই কোনও খামতি রাখতে চাইছে না আয়োজক সংগঠনগুলি।
প্রতিবারের মতোই উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি থেকে লোকজন আসবে আগের দিন। সেই সংখ্যাটা নেহাত কম হবে না বলেই মনে করছেন আয়োজকরা। তাই, তাদের রাখার জন্য ইতিমধ্যেই নেতাজি ইন্ডোর ও ইডেন গার্ডেন্সের বেসমেন্ট চেয়ে সরকার ও সিএবি-কে চিঠি দিয়েছেন আয়োজকরা। যদি এই আবেদনে সরকার এবং সিএবি সাড়া না দেয়, সেক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে মেট্রো চ্যানেলের পিছনের রাস্তা ও রামলীলা ময়দান চেয়ে ইতিমধ্যেই কলকাতা পুরসভাকে চিঠি দিয়েছে আয়োজকরা।
এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে আইপিএল চলছে। আর ইডেন গার্ডেন্স এই আইপিএল মরশুমে ভাড়া নেয় কলকাতা নাইট রাইডার্স ফ্র্যা৷ঞ্চাইজি। এমনকি ব্রিগেড সমাবেশের পরেরদিন অর্থাৎ ২১ এপ্রিল শহরে কেকেআর বনাম গুজরাট টাইটান্সের ম্যাচ রয়েছে। ফলে ইডেনের বেসমেন্ট ভাড়া পাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই নেই বললেই চলে। সেক্ষেত্রে বিকল্প ভাবনাও ভেবে রাখছেন আয়োজকরা।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*