অবশেষে খুললো কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেট। করোনা- কালে প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ ছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক ওই গেট। কেন পড়ুয়াদের জন্য গেট খোলা হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। পাশাপাশি, এই ইস্যুতে আন্দোলনে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরাও। অবশেষে সেই গেট খোলার সিদ্ধান্ত নিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সোমবার খুলে দেওয়া হয়েছে মূল গেট। এত দিন পর্যন্ত বারবার গেট খোলার দাবি জানানো হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য ছিল, সংস্কারের কাজ চলায় বন্ধ রাখা হয়েছে গেট। এ ছাড়া যে প্রবেশদ্বার ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল সেটাও কর্তৃপক্ষ ইচ্ছামত বন্ধ রাখছিল বলে দাবি জানান আন্দোলনরত কর্মচারীরা। অবশেষে গেট খোলায় আন্দোলনের জয় হয়েছে বলে মনে করছেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল, প্রতিনিয়ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নানারকমের সিদ্ধান্ত বদল করছে। সেই কারণে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষাকর্মী, অধ্যাপক এবং বিশ্ববিদ্যালয় আগত সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন ভাবে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। তাঁরা আরও জানান, কর্মচারীদের অফিস অর্ডার ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে নিষেধ করে কর্তৃপক্ষ। এর ফলে ছাত্রছাত্রীদের এবং সাধারণ মানুষকে নানাভাবে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলেই দাবি জানিয়েছিলেন তাঁরা।
কিছুদিন ধরেই এই সব দাবি নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তাঁরা। বিভিন্ন সময় পড়ুয়ারাও একই দাবিতে আন্দোলন করেছেন। এরপর গেট খোলা হল। গেট খোলার পর আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘এটা আন্দোলনের জয়। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক খুলে দিতে বাধ্য হল কর্তৃপক্ষ।’ যদিও বেসরকারিকরণ, বিভাগ গুলো সরিয়ে নিয়ে যাওয়া প্রভৃতি নিয়ে অবস্থানে বসছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, ভিতরে ভিতরে বেসরকারিকরণের চেষ্টা চালাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আন্দোলনকারীদের আরও দাবি, কোনও বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই দ্বারভাঙা বিল্ডিংয়ের পরীক্ষা নিয়ামক বিভাগকে বন্ধ রাখা হয়েছে। মাইগ্রেশন এবং ট্রান্সক্রিপ্টের মতো দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগকে কোনও রকম নথিপত্র ছাড়াই রাজাবাজার ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করা হয়েছে। নানা ভাবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি বেসরকারিকরণের প্রচেষ্টা চলছে বলে দাবি জানান তাঁরা।
উল্লেখ্য, কয়েক দিন আগেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিন স্নাতক উত্তীর্ণ পড়ুয়ারা স্নাতকোত্তরের কোর্সে আসন সংখ্যা বাড়ানোর দাবিতে জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাঁরা উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে ছাত্রছাত্রীদের জোর করে সেখান থেকে সরানোর চেষ্টা করে পুলিশ। ধস্তাধস্তিও হয়। তাঁদের দাবি, অনলাইন পরীক্ষা হওয়ায় পাশের হার বেড়েছে, কিন্তু স্নাতকোত্তরের আসন সংখ্যা এখনও পর্যন্ত সীমিত রাখা হয়েছে। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় যে স্নাতকোত্তরের আসন সংখ্যা বাড়ানো হবে না।
Be the first to comment