দীর্ঘ আড়াই মাস পর দক্ষিণেশ্বরে স্বল্প ভিড়েই পুজো সারলেন ভক্তরা

Spread the love

শনিবার থেকে খুলে গেল মা ভবতারিণী মন্দিরের দরজা। তবে চেনা শনিবারের ছবি অবশ্য এদিন দেখা গেল না। করোনাভাইরাস আবহেই এদিন থেকে মন্দির খোলার সিদ্ধান্ত নেয় মন্দির কর্তৃপক্ষ।

দীর্ঘ আড়াই মাস ফের মন্দির খোলায় অনেক ভিড়ের বা দর্শনার্থীদের সমাগমের আশঙ্কা করেছিলো মন্দির ও পুলিশ প্রশাসন। অবশ্য এদিন সকালে মন্দির খোলার আগেই দর্শনার্থীদের লম্বা লাইন পড়ে। কিন্তু সকাল ৮টার পর থেকে ক্রমশই মন্দির ফাঁকা হতে শুরু করে।

অন্যদিকে যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনেই এদিন থেকে মন্দিরে দর্শনার্থীদের প্রবেশের অনুমতি মেলে। অবশেষে আড়াই মাস বাদে দক্ষিণেশ্বর মন্দির শনিবার থেকে খুলল। মন্দির কমিটির তরফে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল সকাল ৭টা থেকে সকাল ১০ টা ও দুপুর সাড়ে ৩টে থেকে সন্ধে সাড়ে ৬টা –এই দুটি পর্যায় মন্দির খোলা হবে দর্শনার্থীদের জন্য। মন্দির খুলে দেওয়া হলেও একাধিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে দর্শনার্থীদের তা আগেই জানিয়েছিল মন্দির কর্তৃপক্ষ। সেই মতো এ দিন সকাল থেকেই প্রথমে দর্শনার্থীদের তাপমাত্রা পরীক্ষা তারপর স্যানিটাইজার টানেলের মাধ্যমে ঢুকে তবেই মন্দিরের ভেতরে ঢোকার অনুমতি মিলেছে দর্শনার্থীদের।

মন্দিরের ভেতরে ঢুকলেও সেখানেও নির্দিষ্ট করে দূরত্ব মেনে মার্ক করে দেওয়া হয়েছে দর্শনার্থীদের জন্য লাইনে দাঁড়াবার। মার্ক করে দেওয়া জায়গাতেই দর্শনার্থীরা লাইনে দাঁড়িয়ে তবেই পুজো দিতে পারবেন। এদিন সকালেই মন্দিরের বাইরে ও ভেতরে মার্ক করা অংশতে দর্শনার্থীরা লাইনে দিয়ে পুজো দিলেন ৷

তবে দর্শনার্থীদের সঙ্গে যাতে পুরোহিতদের কোনও স্পর্শ না হয় তা নিয়েও বিশেষভাবে সতর্ক ছিল দক্ষিণেশ্বর মন্দির কর্তৃপক্ষ। মন্দিরের নিরাপত্তারক্ষী থেকে শুরু করে পুরোহিতরা সবাই পিপিই কিট পরেছিলেন। গর্ভগৃহে আপাতত প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মন্দির কর্তৃপক্ষ। মূল মন্দিরের সামনে থেকে অবশ্য দাঁড়িয়ে থেকে পুজো দিতে পারছেন দর্শনার্থীরা। সেক্ষেত্রেও সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনেই দর্শনার্থীদের পুজো দিতে হচ্ছে।

বৃহস্পতিবারই সাংবাদিক সম্মেলন করে জানানো হয়েছিল শুধুমাত্র প্রসাদ নিয়ে পুজো দেওয়া যাবে। কোন রকম ফুল বা সিঁদুর দিয়ে পুজো দিতে পারবেন না ভক্তরা। সেই মোতাবেক বেশিরভাগ দর্শনার্থী প্রসাদ নিয়ে পুজো দিলেও আবার অনেক দর্শনার্থী খালি হাতেই মাকে প্রণাম করে চলে যান।

শনিবার সকালে অবশ্য দেখা গেলো দক্ষিণেশ্বর সংলগ্ন এলাকার মানুষই এদিন মন্দিরে এসে পুজো দিলেন। দক্ষিণ কলকাতা বা মধ্য কলকাতা বা অন্যান্য অংশ থেকে দর্শনার্থীদের আসার সংখ্যা খুবই নগণ্য বলা যায়।

অন্যদিকে দীর্ঘ আড়াই মাস বাদে খুলেছে মন্দিরের ডালার দোকানগুলো। মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল জোড়-বিজোড় পদ্ধতিতে ডালার দোকান খুলবে। সেই মোতাবেক দোকানগুলি খুললেও দর্শনার্থীরা কম আসায় কিছুটা হতাশ ব্যবসায়ীরা। গত দুমাস ধরে সঞ্চিত অর্থ দিয়েই এঁরা সংসার চালিয়েছেন।

শনিবার থেকে মন্দির খোলায় প্রচুর ভক্তদের সমাগমের আশা করেছিল মন্দির কর্তৃপক্ষ। যার জেরে গোটা মন্দির চত্বর জুড়ে প্রচুর পুলিশি নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল। দীর্ঘ আড়াই মাস বাদে মন্দির এদিন খুললেও অবশ্য দর্শনার্থীদের ভিড় খুব একটা নজরে পড়েনি এ দিন। তবে সে ক্ষেত্রে আগামিকাল অর্থাৎ রবিবার এদিনের থেকে বেশি ভিড় হবে বলেই মনে করছে মন্দির কর্তৃপক্ষ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*