খোঁজ নেয় না সন্তানরা। ছেলেও নয়। মেয়েরাও নয়। গত প্রায় দু মাস ধরে অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতেই পড়েছিলেন। প্রতিবেশীদের ভরসায়। বুধবার তাঁরাই পুলিশের সাহায্য নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করলেন মরণাপন্ন অশীতিপর বৃদ্ধাকে।
ডানকুনি নন্দনকাননের বাসিন্দা অসীমা দাস (৮০)। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর ছেলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। দমদমে থাকেন। দুই মেয়ে বিবাহিত। যে যার মতো ঘরকন্নায় ব্যস্ত। কেউ মায়ের কোনও খোঁজ রাখেন না। খোঁজ রাখেন শুধু বাড়ির দলিলের।
অসীমাদেবীর বাড়ির এক ভাড়াটে ও প্রতিবেশীরা জানান, তাঁরাই প্রতিদিন প্রাণ বাঁচানোর মতো খাবারের জোগান দিতেন তাঁকে। কোনওভাবে তার জোরেই ধুঁকে ধুঁকে বেঁচে রয়েছেন তিনি। তবে জুটতো না ওষুধপত্র। তার উপর গত কয়েক দিন ধরে জ্বরে ভুগছেন অসীমাদেবী। ফলে আর উঠে দাঁড়ানোরও ক্ষমতা নেই। কিন্তু সন্তান যে থেকেও নেই। তাই প্রশ্ন ওঠেনি চিকিৎসা আর দেখভালের। অসীমাদেবীর প্রতিবেশীদের অভিযোগ, বৃদ্ধা অসুস্থ, ছেলেমেয়েদের সেই খবর দেওয়া হলেও কেউ আসেননি। উল্টে প্রতিবেশীরা কেন তাঁর বাড়িতে খবর দিতে গেছেন, তা জানতে চেয়ে তাঁদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন ছেলে।
বুধবার বৃদ্ধার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে উপায়ান্তর না দেখে আবারও ছেলেকে ফোন করে খবর দেন এক প্রতিবেশী। কিন্তু মাকে দেখতে আসেনি ছেলে। তখন বাধ্য হয়েই ডানকুনি থানায় খবর দেন তাঁরা। পুলিশকর্মীরা ফোন করলেও বৃদ্ধার ছেলে খারাপ ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। এরপর মেয়েদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদেরও সাড়া মেলেনি। তাই পুলিশের সহযোগিতায় নন্দনকাননের বাসিন্দারাই চণ্ডীতলা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করে বৃদ্ধাকে। এখন সেখানেই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ভাগের মা।
Be the first to comment