শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন ১০ নভেম্বর খুলতে হবে দাড়িভিট স্কুল। কিন্তু আদৌ সেই নির্দেশ কার্যকর করা যাবে কি? মৃত ছাত্রদের পরিবারের সঙ্গে বৈঠকের পরে সন্দিহান জেলা প্রশাসন।
স্কুলের শিক্ষকদের বেতন বন্ধ করা হয়েছে। সাসপেন্ড করা হয়েছে প্রধানশিক্ষক ও সহকারী প্রধানশিক্ষককে। ডাকা হয়েছে পরের পর বৈঠক। তবুও জট খোলার কোনও আশা দেখতে পাচ্ছেন না কেউ। বরং গুলিতে মৃত দুই ছাত্রের পরিবার সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনড় থাকায় সমস্যা জটিল হচ্ছে আরও।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশে শনিবার গুলিতে নিহত দুই ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান ইসলামপুরের মহকুমাশাসক, বিডিও এবং দাড়িভিট বিদ্যালয়ের প্রশাসক। কিন্তু ঘটনার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্কুল খুলতে দেওয়া হবে না বলে তাঁদের পরিষ্কার জানিয়ে দেন মৃত ছাত্র তাপস বর্মন ও রাজেশ সরকারের পরিবারের সদস্যরা। ফলে ব্যর্থ হয়েই ফিরতে হয় তাঁদের।
উর্দু ও সংস্কৃত শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে ছাত্র বিক্ষোভের জেরে গত ২০ সেপ্টেম্বর তেতে ওঠে দাড়িভিট উচ্চ বিদ্যালয়। ঘটনা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। গুলিতে মৃত্যু হয় ওই স্কুলেরই দুই প্রাক্তন ছাত্রের। পুলিশের গুলিতে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠলেও, বিক্ষোভ দমনে কোনও গুলি চালানো হয়নি বলে পাল্টা দাবি করে পুলিশ। তাই ঘটনার সিবিআই তদন্ত চেয়ে সন্তানদের দেহ দাহ না করে গ্রামেই মাটির নীচে পুঁতে রাখেন স্বজনরা। সেই থেকে স্কুলও বন্ধ। স্বাভাবিক পঠনপাঠন চালুর জন্য বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও নিহত দুই ছাত্রের পরিবার ও পড়শিদের বাধায় তা ধাক্কা খাচ্ছে বারবার।
আগামী ১০ নভেম্বর দাড়িভিট উচ্চ বিদ্যালয় খুলতেই হবে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এই নির্দেশ পেয়েই আজ তাপস ও রাজেশের বাড়িতে যান ইসলামপুরের মহকুমাশাসক মনীশ মিশ্র, বিডিও শতদল দত্ত ও অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকরা। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন তাঁরা। কিন্তু তাপস ও রাজেশের মৃত্যুর সিবিআই তদন্তের দাবি এবং ধৃত আটজন গ্রামবাসীকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার দাবিতে তাঁরা অনড় থাকেন। ফলে রিক্ত হাতেই ফিরে আসতে হয় জেলা প্রশাসনকে।
ইসলামপুর মহকুমাশাসক জানিয়েছেন, ওই দুই পরিবারের দাবি নিয়ে ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট পাঠাবেন তিনি। তবে আগামী ১০ তারিখ স্কুল খোলা যায় কিনা তা নিয়ে ধোঁয়াশাই থেকে গেল।
Be the first to comment