কাজ নেই৷ চতুর্দিকে করোনার আতঙ্ক৷ খাবার নিয়েও চরম অনিশ্চয়তা৷ এমন সংকটে একমাত্র নিরাপদ আশ্রয় নিজের বাড়ি৷ কিন্তু বাড়ি ফিরতে গেলেও মিলছে না যানবাহন৷ এই পরিস্থিতিতে ভিন রাজ্য থেকে বড় বড় শহরে কাজ করতে আসা হাজার হাজার শ্রমিক হেঁটেই মাইলের পর মাইল পথ পেরিয়ে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে ফেরার মরিয়া চেষ্টা করছেন৷ শুক্রবারই প্রকাশ্যে এসেছিল এমন ছবি৷
কিন্তু বাড়ি ফেরার এই মরিয়া চেষ্টাই প্রাণ কাড়ল চার শ্রমিকের৷ হাইওয়ে ধরে বাড়ি ফেরার পথে বেপরোয়া ট্রাক এসে পিষে দিল তাঁদের৷ আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও তিনজন৷
শুক্রবার ভোররাত তিনটে নাগাদ মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে মুম্বাই- আহমেদাবাদ হাইওয়ের উপর ভিরার এলাকায়৷ জানা গিয়েছে, মুম্বাইতে কর্মরত সাতজন শ্রমিক কাজ হারানোর পর পায়ে হেঁটেই রাজস্থানে তাঁদের গ্রামে ফিরছিলেন৷ কিন্তু শুক্রবার রাতে তাঁরা গুজরাত- মহারাষ্ট্র সীমান্তের কাছে ভিলাড় থেকে তাঁদের ফিরিয়ে দেয় গুজরাত পুলিশ৷ ফলে ফের তাঁরা ভাসাইতে নিজেদের ঝুপড়িতে ফিরে আসছিলেন৷ সেই সময়ই একটি লরি এসে তাঁদের পিষে দেয়৷ ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় চার শ্রমিকের৷ হাসপাতালে ভর্তি তিনজনের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক৷
পুলিশ ট্রাকটিকে আটক করলেও চালক পালিয়ে যায়৷ মৃতদের মধ্যে একজনের নাম কল্পেশ জোশি (৩২) এবং ময়াঙ্ক ভাট (৩৪)৷ বাকি মৃত এবং আহতদের এখনও পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি৷ অভিযোগ, লকডাউনের কারণে যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় হাইওয়ের সব আলো নিভিয়ে রাখা হয়েছিল৷ যেখানে দুর্ঘটনা ঘটে, সেখানেও অন্ধকার ছিল৷
গুজরাত, রাজস্থানের বহু শ্রমিকই মুম্বাইয়ে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন৷ করোনা লকডাউনের জেরে তাঁদের অধিকাংশই এখন কর্মহীন৷ ফলে, যে কোনও উপায়ে বাড়ি ফিরতে মরিয়া তাঁরা৷ এই পরিযায়ী শ্রমিকদের কেন বাড়ি ফিরতে সরকার সাহায্য করবে না, সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে৷
Be the first to comment