মৃত বিধায়কের পকেট থেকে সুইসাইড নোট পেলো পুলিশ

Spread the love

অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের। সোমবার ভোরে বাড়ির এক কিলোমিটার দূরের একটি চায়ের দোকান থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। বিধায়কের পরিবার ও বিজেপির দাবি, তাঁকে খুন করা হয়েছে। যদিও পুলিশ প্রাথমিকভাবে মনে করছে, এটা আত্মহত্যারই ঘটনা।

রায়গঞ্জের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে এটা আত্মহত্যা। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, বিধায়কের পকেটে থাকা একটি সুইসাইড নোট।

পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত বিধায়কের পকেট থেকে যে সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে, তাতে কয়েকজনের নাম লেখা রয়েছে। তাঁরাই বিধায়কের মৃত্যুর জন্যে দায়ী বলে লিখে গিয়েছেন বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়। যদিও ওই সুইসাইড নোটে কাঁদের নাম রয়েছে, তা নিয়ে পুলিশ কর্তারা মুখ খোলেননি। তবে নোটে যাদের নাম উল্লেখ করা রয়েছে, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।

তবে, ইতিমধ্যে বিধায়কের মৃত্যুকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ-সহ গেরুয়া শিবিরের সকলেই এই ঘটনাটিকে খুন বলে উল্লেখ করে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের যুক্তি, আত্মহত্যা যদি করে থাকতেন বিধায়ক, তাহলে তাঁর হাত বাঁধা রইল কেন? দ্বিতীয়ত, বৃষ্টির মধ্যে বেরিয়েছিলেন বিধায়ক। তাঁর জামা-প্যান্টের কোথাও কাদা লাগল না কেন? এমন বেশ কিছু বিষয় নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি।

এদিন বিধায়কের মৃত্যুর বিষয়টি নিয়েও রাজ্যপালের দ্বারস্থ হন বিজেপি নেতারা। ট্যুইট করে ঘটনার যথাযথ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও। আগামীকাল, মঙ্গলবার ১২ ঘণ্টার উত্তরবঙ্গ বনধ ডেকেছে বিজেপি।

যদিও তৃণমূলের তরফে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কথায়, ‘বিজেপি মানেই ভারতীয় দাঙ্গা পার্টি। যারা মারধর বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা করে। কিন্তু তৃণমূল এসব কিছুই করে না। কিন্তু যখন কোন মৃত্যু হয় সেটা বেদনাদায়ক। তাই হেমতাবাদে বিজেপি বিধায়কের মৃত্যুর অবশ্যই পুলিশি তদন্ত হবে।’

সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ‘সিবিআই করে চিৎকার করে কোন লাভ নেই। তাহলে ভিন রাজ্যে যেখানে পুলিশদের হত্যা করা হয়েছে, সেখানে কেন বিজেপি সিবিআই এর তদন্ত দাবি করছে না? আসলে বিজেপি সবকিছুর মধ্যেই রাজনীতি খোঁজে। তবে এটা যোগীরাজ নয়। এটা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্য।’ উল্লেখ্য, এই ঘটনায় ইতিমধ্যে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার।

উল্লেখ্য, ২০১৬সালে বিধানসভা নির্বাচনে হেমতাবাদ কেন্দ্র থেকে সিপিএমের টিকিটে জিতেছিলেন মৃত বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়। বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতে পরপর তিনবার সিপিএমের প্রধানও ছিলেন তিনি। সমবায় সমিতি গড়ে গ্রামের বহু মানুষকে আর্থিক সাহায্য করেছেন দেবেন্দ্রনাথ রায়। এলাকায় তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল প্রবল।

এরপর ২০১৯ সালে দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করেন তিনি। সেই তাঁরই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল সোমবার। রাজনৈতিক শিবির ছাড়াও স্থানীয় মানুষের মধ্যে বিধায়কের মৃত্যু ঘিরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*