ভুল চিকিৎসার জেরে রোগীমৃত্যুর ঘটনা, কাঠগড়ায় কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতাল

Spread the love

আবারও ভুল চিকিৎসার অভিযোগে রোগী মৃত্যুর ঘটনা। নাম জড়ালো অ্যাপোলো হাসপাতালের। মৃতের নাম অশোক দিওয়ান। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিলো ৬১ বছর। জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন হাই গ্রেড স্টেজ ৪ ব্রেন স্টেম ক্যান্সারের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে নিউটাউনের ওই বাসিন্দার। অশোকবাবুর ছেলে আশ্বানী দিওয়ান জানান, প্রতিদিন সকালে প্রাতঃভ্রমণে যেতেন বাবা। কিন্তু হঠাই দেখা দেয় সমস্যা। এরপরই বেশী হাঁটতে গেলেই পড়ে যেতেন তিনি। স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হলে তিনি এমআরআই করার পরামর্শ দেন। তারপরই এমআরআই রিপোর্ট থেকে জানা যায়, শরীরে কিছু ইনফেকশন অ্যাটাকের জন্যই এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

এরপরই অশোক দিওয়ানকে ভর্তি করা হয় ই.এম.বাইপাসের অভিজাত হাসপাতাল অ্যাপোলোতে। শুরু হয় চিকিৎসা। থুরি, শুরু হয় ভুল চিকিৎসা। চিকিৎসকরা রোগের লক্ষন ঠিকমতো বুঝতে না পেরে শুরু করেন হাই স্টেজ ব্রেন ক্যান্সারের চিকিৎসা। চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন উনি ১৮ মাসের বেশী বাঁচবেন না। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপি। জুলাই মাস থেকে নভেম্বর ৪ মাস ধরে চলতে থাকে এমন চিকিৎসা। আর এতেই হিতে বিপরীত হয়ে যায়। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই ক্রমশ দুর্বল হতে থাকেন রোগী। পরিবারের লোকজন কারন জিজ্ঞাসা করলেও নানা কারন দেখিয়ে তাদের পাশ কাটিয়ে দেওয়া হয়। এভাবে কয়েকমাস চলার পর হাসপাতাল কতৃপক্ষ জানায় হাসপাতালের পক্ষ থেকেই বিনা পয়সায় রোগীকে সারিয়ে তোলা হবে।

আর এতেই খটকা লাগে রোগীর পরিজনদের। তারপরই মেডিকার এক বিশেষজ্ঞকে দেখান রোগীর ছেলে আশ্বানী। আর তখনই তিনি জানতে পারেন আসল সমস্যার কথা। তিনি বুঝতে পারেন তাঁর বাবার ব্রেন ক্যন্সারই হয়নি। তবু তাঁকে ভুল চিকিৎসা করে মৃত্যুমুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এরপরই অশোক বাবুকে অ্যাপোলো থেকে ছাড়িয়ে কলকাতার অন্যান্য হাসপাতালে ভর্তি করানোর চেষ্টা করা হলেও ওনার অবস্থা এতটাই সংকটজনক হয়ে পড়ে যে তাঁকে আর কোথাও ভর্তি নেওয়া হয় নি। বহু চেষ্টার পর তাঁকে চেন্নাইয়ের অ্যাপোলোতে ভর্তি করানো হয়। তবে তখন আর কিছুই করার ছিল না। সেখানেই গত ২৬ ডিসেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

তারপর থেকে অশোকবাবুর মৃত্যু কিছুতেই সহজে মানতে পারছেন না পরিবারের লোকজন। পরিবারের দাবি অবিলম্বে ওইসব ডাক্তারদের লাইসেন্স ক্যান্সেল করা হোক। পাশাপাশি তাঁদের আরও দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করুন এবং আসল সত্য প্রকাশ্যে আনুন। ভবিষ্যতে আর কোনও মানুষ যেন এমন পরিস্থিতির শিকার না হন।

তবে তাঁদের বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে অ্যাপোলো কতৃপক্ষ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*