অসুস্থ শিশু কোলে নাচানাচি বৃহন্নলাদের, প্রবল শ্বাসকষ্টে মৃত্যু সদ্যোজাতের

Spread the love

পরিবারের আপত্তিতেও হেলদোল ছিল না। ঘরে ঢুকে একরত্তি শিশুকে নিয়ে দেদার নাচ বৃহন্নলাদের। সদ্যোজাত অসুস্থ বলার পরেও শোনেননি বৃহন্নলারা। বাড়ির উঠোনেই সদ্যোজাতকে নিয়ে নাচানাচি। কিছুক্ষণের মধ্যেই মর্মান্তিক পরিণতি। অচিরেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে শিশুটি। ঝাড়গ্রামের শিলদায় সদ্যোজাত শিশুর অকালমৃত্যুতে শোকের ছায়া। একইসঙ্গে বৃহন্নলাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা এলাকা। থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত বৃহন্নালাদের আটক করেছে পুলিশ।

বাড়িতে শিশুর জন্ম হলেই বৃহন্নলাদের আগমন হয়। সদ্যোজাতকে আশীর্বাদের নামে টাকা ও অন্য সামগ্রী দাবি করেন বৃহন্নলারা। অনেক সময় তাঁদের জোরজুলুমের মাত্রা বেড়ে যায়। একাধিক এলাকায় বৃহন্নলারা গন্ডগোলেও জড়িয়ে পড়েন বাসিন্দাদের সঙ্গে। এবার ঝাড়গ্রামের শিলদায় বৃহন্নলাদের জোরজুলুমের বলি হল একরত্তি শিশু। অভিযোগ, সদ্যোজাত ওই শিশুটি বলা সত্ত্বেও পরিবারের বারণ শোনেননি বৃহন্নলারা।

একরকম জোর করেই শিশুটিকে কোলে তুলে নেন বৃহন্নলারা। তারপর বাড়ির উঠোনেই শুরু দেদার নাচ। নাচানাচিতে আপত্তি করতে থাকেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু কোনও আপত্তিতেই কান দেননি বৃহন্নলারা। ক্রমেই আরও বেড়েছে উদ্দাম নাচ। এক সময় বৃহন্নলাদের কোলেই অসুস্থ হয়ে পড়ে সদ্যোজাত শিশুটি। প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয় শিশুটির। পরিবারের সদস্যরা তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যায় শিশুটিকে। কিন্ত ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে এরপর অভিযুক্ত বৃহন্নলাদের আটক করেছে বিনপুর থানার পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলদার খিলার দম্পতির যমজ পুত্র সন্তান হয়। এক শিশুপুত্রের জন্মের পর থেকেই হৃদযন্ত্রের সমস্যা ছিল। জন্মের পর থেকেই ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল সুমন নামে ওই শিশুটি। হাসপাতালে চিকিৎসকদের কড়া পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল শিশুটিকে। সপ্তাহ দু’য়েক আগে সুস্থ হওয়ায় শিশুটিকে বাড়িতে আনা হয়। কিন্তু বাড়িতে রেখেও নিয়মিত চিকিৎসা চলত শিশুপুত্রের।

শুক্রবার সকালে বাড়িতে হঠাৎই চড়াও হন বৃহন্নলারা। বাড়িতে এসে ১০ হাজার টাকা দাবি করতে থাকেন তাঁরা। একইসঙ্গে শিশু দুটিকে তাঁদের হাতে দেওয়ার জন্য জোর করতে থাকেন। পরিবারের আপত্তিকে একরকম অগ্রাহ্য করেই শিশু দুটিকে কোলে তুলে নেন বৃহন্নলারা। বারণ করা সত্ত্বেও শিশু দুটিকে নিয়ে নাচানাচি করতে থাকেন তাঁরা।

কিছুক্ষণের মধ্যেই বৃহন্নলাদের কোলেই অসুস্থ হয়ে পড়ে একরত্তি সুমন। প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায় সদ্যোজাতের। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানেই চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পরই বৃহন্নলাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাসিন্দারা। ক্ষোভে ফুঁসতে থাকে পরিবারও। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় যায় বিনপুর থানার পুলিশ। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত বৃহন্নলাদের আটক করে পুলিশ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*