ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ নিজেদের গা থেকে ঝেড়ে ফেলতে একে-অপরের ঘাড়ে দোষ চাপালেন তৃণমূল কংগ্রেসের দুই নেতা। এই ঘটনাকে সরকার বিরোধিতায় নিজেদের অস্ত্র করেছে বিজেপি ৷ ভুয়ো টিকাকরণ কাণ্ডে একদিকে নাম জড়িয়েছে তালতলা তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের (INTTC) নেতা অশোক চক্রবর্তীর।
অপরদিকে, উঠে এসেছে তৃণমূল কংগ্রেসের ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর ইন্দ্রাণী সাহা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও । এই নিয়ে অবশ্য একে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছেন দলের এই দুই নেতা ।
অশোক চক্রবর্তীর অভিযোগ, ২০২০ সালে কালীপুজোর আগে তাঁর এলাকায় একটি রক্তদান শিবিরে তাঁর সঙ্গে দেবাঞ্জন দেবের আলাপ হয় । ওই ক্লাবের কমিটিতে রয়েছেন স্থানীয় ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর ইন্দ্রাণী সাহা বন্দ্যোপাধ্যায় । তাঁর মাধ্যমেই দেবাঞ্জনের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয় বলে দাবি করেছেন অশোক চক্রবর্তী । তিনি এও অভিযোগ করেন, স্থানীয় একটি শেড তৈরিতে টাকাও দিয়েছিল দেবাঞ্জন ।
যদিও এই অভিযোগ শোনামাত্রই তা খারিজ করে দিয়েছেন ইন্দ্রাণী সাহা বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি জানান, ব্যক্তিগতভাবে তাঁর সঙ্গে দেবাঞ্জন দেবের কোনও যোগাযোগ নেই। তাঁর কথায়, “আমি তাঁকে কোনওদিন দেখিইনি । আমার মোবাইলের কল রেকর্ড ঘেঁটে দেখলেও দেখতে পাবেন, কখনও আমি তাঁর সঙ্গে কথা বলিনি । তবে আমার ছেলেরা বলেছিল, তাঁদের দেবাঞ্জন চাকরি দেওয়ার কথা বলেছিল । এর চেয়ে বেশি কিছু আমার জানা নেই ।”
ইন্দ্রাণীর অভিযোগ, ব্যক্তিগত শত্রুতা থেকেই অশোক চক্রবর্তী তাঁর নাম দেবাঞ্জন দেবের সঙ্গে জড়িয়ে দিতে চাইছেন । তাঁর দাবি, এই অবস্থায় পুলিশের উচিত প্রকৃত দোষীকে চিহ্নিত করা । এর জন্য পুলিশকে সবরকম সাহায্য করতেও তিনি প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন ইন্দ্রাণী ।
এদিকে অশোক চক্রবর্তী আবার বলেছেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার ভাবনাচিন্তা করছেন । প্রয়োজনে তিনি সুপ্রিম কোর্ট বা হাইকোর্টকে সব রকম তথ্য দিতে প্রস্তুত । তবে বিষয়টি নিয়ে প্রকৃত তদন্ত হোক, চাইছেন তিনিও ।
তৃণমূল কংগ্রেসের এই দুই নেতার তু তু ম্যায় ম্যায়ের মধ্যেই এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন কলকাতা পৌরনিগমের মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেছেন, “আমারা যাঁরা জনতার কাজ করি, তাঁদের খুব সহজেই কোনও ঘটনায় জড়িয়ে দেওয়া যায় । তার অর্থ এই নয়, আমরা দোষী । ইন্দ্রাণীর ক্ষেত্রেও তেমনই হয়েছে । পুলিশ তদন্ত করছে । আমাদের সকলের উচিত, সেই তদন্তের উপর ভরসা রাখা । সত্যিই যদি কেউ দোষী হয়, আইন আইনের পথে চলবে ।”
Be the first to comment