ধীরে ধীরে আরও ঘনীভূত হচ্ছে দেবাঞ্জন দেবকে নিয়ে রহস্য। ককসবা কাণ্ডে ধৃত ভুয়ো আইএস আধিকারিকের সঙ্গে শাসকদলের যোগের অভিযোগ আগেই উঠেছিল। টুইটারে বিভিন্ন প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে ছবি দেখা গিয়েছে দেবাঞ্জনের। এবার উঠে এল আরও এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। মধ্য কলকাতার তালতলায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এক মূর্তির ফলকে পাওয়া গেল দেবাঞ্জন দেবের নাম।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তির ফলকে তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রী তাপস রায়, বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের পাশে খোদাই করা রয়েছে দেবাঞ্জনের নাম। সেখানে দেবাঞ্জনকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যুগ্ম সচিব হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি মন্ত্রী ফিরহাদের মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। এদিকে কসবা কাণ্ডের পর্দা ফাঁস হতেই মূর্তিতে দেবাঞ্জনের নামে কালি লাগিয়ে দেওয়া হয়। তবে সেই নাম লোকানো যায়নি। এই বিষয়টি নিয়ে এবার জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে শাসক দলের সঙ্গে কি কোনও যোগ রয়েছে দেবাঞ্জনের?
অন্যদিকে, ভুয়ো টিকাকরণের ঘটনায় প্রথম থেকে চুপ থেকে এ বার ধীরে ধীরে মুখ খোলা শুরু করেছে বিজেপিও। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে পদ্মশিবিরের সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, প্রত্যেকেই তোপ দেগেছেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে। রাজ্য সরকারের হাই প্রোফাইল মন্ত্রীদের নাকের ডগায় কী ভাবে দিনের পর দিন এমনটা চলল, প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন সকলেই।
শুভেন্দু অধিকারী বৃহস্পতিবার রাতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ট্যাগ করে একটি টুইট করেন। যেখানে তিনি প্রশ্ন তোলেন, যেখানে রাজ্যের একজন সাংসদ (মিমি চক্রবর্তী) এই ভ্যাকসিন জালিয়াতির শিকার হচ্ছেন, সেখানে সাধারণ মানুষের সুরক্ষা কোথায়?
টুইটে সুর চড়ান লকেট চট্টোপাধ্যায়ও। তাঁর বক্তব্য, এই অতিমারির সময় মানুষের জীবন নিয়ে খেলছে তৃণমূল।
এদিকে দেবাঞ্জনের টুইটার হ্যান্ডেলে একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে তার ছবি রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিজেকে আইএএস অফিসার হিসেবে পরিচয় দিয়ে নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করেছিল ধৃত দেবাঞ্জন। একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে ছবি তুলে দেবাঞ্জন নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে পোস্ট করত।
লালবাজার সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই তার টুইটার হ্যান্ডেলটি নিজেদের দখলে নিয়েছেন গোয়েন্দারা। তার টুইটার হ্যান্ডেলের পেজে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক ব্যক্তিত্ব, যেমন ফিরহাদ হাকিম থেকে শুরু করে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার ছবি। প্রশ্ন উঠেছে কীভাবে এই রাজ্য সরকারি ব্যক্তিরা এবং মন্ত্রীদের একাংশ বুঝতেই পারলেন না যে, দেবাঞ্জন আদতে ভুয়ো আইএএস আধিকারিক।
Be the first to comment