স্থানীয় ভাবে নয়, কোনও ব্যক্তির কাছে নয়। একেবারে দেশের রাজধানীতে গিয়ে নিজেদের দাবি জানানোর দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে গোটা দেশের কয়েক হাজার কৃষক। তাঁদের আশা, সরকার মন দিয়ে সমস্যাগুলির কথা শুনবে এবং তার সমাধানের জন্য কোনও গুরুত্বপূর্ণ উপায় অবলম্বন করবে। ়
এমন আশা নিয়ে বৃহস্পতিবার দিল্লিতে জড়ো হওয়া কয়েক হাজার কৃষকের আসল আসল দাবি, কৃষিঋণ মকুব এবং ফসলের জন্য ভাল দাম পাওয়া। এই বিশাল মিছিলকে সমর্থন জানিয়েছে বাম-সহ দেশের বেশ কয়েকটি কৃষক সংগঠন। দিল্লির পাঁচটি জায়গা থেকে ২৫ কিলোমিটার হেঁটে আজ শুক্রবার, রামলীলা ময়দানের দিকে আসছেন তাঁরা। তাঁদের লক্ষ্য সংসদ ভবনে যাওয়া। সেই কারণে বিশেষ নিরাপত্তার জন্য সাড়ে তিন হাজার পুলিশ সংসদ ভবন চত্বরে মোতায়েন করেছে দিল্লি পুলিশ।
১) অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ট্রেনে বা ট্র্যাক্টরে করে দিল্লি এসেছেন হাজার হাজার কৃষক।
২) রামলীলা ময়দানে তাঁদের জমায়েতের পরে ময়দানের রং সম্পূর্ণ লাল হয়ে গিয়েছিল গত কাল। কয়েক হাজার লাল পতাকায় ভরে গিয়েছিল বিশাল রামলীলা ময়দান। স্লোগান ওঠে, অযোধ্যা নয়, কর মকুব চাই।
৩) ওড়িশার এক কৃষক ভ্রমর বিশি বলেন, “আমি তিন লক্ষ টাকার ঋণ নিয়েছিলাম। তিন বছর আগে। আমার পক্ষে ওই ঋণ শোধ করা খুব মুশকিল। আমি চাই আমার ঋণ মকুব করে দেওয়া হোক।” পাঁচ সদস্যের পরিবারে তিনিই একমাত্র আয় করেন।
৪) “যে ধরনের সবজি আমরা ওখানে চাষ করি, তার জন্য যথেষ্ট বাজারই নেই। কেজি প্রতি এক টাকা বা দু’টাকায় বিক্রি করতে হয় আমাদের। কী করে চলবে বলুন তো?”, বলেন ৬৫ বছরের উর্মিলা নাইয়া। ৭৮ জন কৃষকের সঙ্গে, ৩০ ঘন্টা পথ উজিয়ে, সুন্দরবন থেকে দিল্লি এসেছেন তিনি।
৫) ১২০০ জন কৃষক তামিলনাড়ু থেকে গত কাল সকালে দিল্লি এসে পৌঁছেছেন দু’টি নরমুণ্ডের খুলি নিয়ে। ওই খুলি দু’টি তাঁদেরই সতীর্থ দুই কৃষকের, যাঁরা ঋণ মেটাতে না পেরে আত্মহত্যা করেন।
৬) দিল্লিতে শেষ বার কৃষক বিক্ষোভ হয়েছিল ২ অক্টোবর। সেই সময় ব্যারিকেড, জল কামান এবং কাঁদানে গ্যাস প্রয়োগ করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করা হয়েছিল। এবারে অন্তত তেমন কিছু হবে না বলেই আশা করছেন কৃষক নেতারা।
৭) দিল্লির পাঁচটি গুরুদ্বার বহু কৃষককে রাতে থাকার জন্য জায়গা দিয়েছে। যদিও, বেশির ভাগ কৃষকই রামলীলা ময়দানে তাঁবু খাটিয়ে রাত কাটিয়েছেন।
৮) দিল্লির জল বোর্ড তাঁদের জন্য জলের ব্যবস্থা করেছে। আম আদমি পার্টি দিচ্ছে খাবারের প্যাকেট।
৯) বহু চিকিৎসক, উকিল, অধ্যাপক, শিল্পীরা স্বেচ্ছাসেবক হয়ে এগিয়ে আসছেন কৃষকদের পাশে দাঁড়াবেন বলে।
১০) এই কৃষক মার্চকে কী ভাবে সামলায় কেন্দ্রের শাসক বিজেপি সরকার, সেটা নিয়েই চিন্তিত রাজনৈতিক মহল।
Be the first to comment